জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও ছাত্র-জনতার তিন দফা দাবিকে ঘিরে আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে ব্যাপক গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বিকেল ৩টা থেকে শুরু হতে যাওয়া এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে প্রশাসন পর্যন্ত সবার নজর এখন শাহবাগে।
এই আন্দোলনের মূল তিনটি দাবি হলো—বর্তমান সরকারকে বিলুপ্ত করা, নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন, এবং নির্যাতিত রাজনৈতিক কর্মীদের মুক্তি নিশ্চিত করা। দাবিগুলোর পেছনে রয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর দীর্ঘদিনের অভিযোগ ও চাপ। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ের রাজনৈতিক সংকট ও প্রশাসনিক কঠোরতার কারণে ছাত্র-জনতা ফের রাজপথে নেমে এসেছে।
এদিকে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক স্পষ্ট ঘোষণায় এনসিপি’র দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ জানিয়েছেন, “শাহবাগ ছাড়া দেশের অন্য কোথাও কোনো ধরনের ব্লকেড হবে না।” তবে, তিনি নিশ্চিত করেছেন, সারা দেশের বিভিন্ন “জুলাই-স্পট” অর্থাৎ পূর্বনির্ধারিত এলাকাগুলোতে “গণ-অবস্থান কর্মসূচি” পালিত হবে।
এই ঘোষণার ফলে দেশের অন্যান্য এলাকায় ধীরে ধীরে উত্তেজনা প্রশমিত হলেও শাহবাগ এলাকায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। সমাবেশের আগে থেকেই রাজধানীর এই গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব সদস্য। ট্রাফিক পুলিশ ইতোমধ্যেই বিকল্প সড়ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে নগরবাসীকে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শুধুমাত্র শাহবাগে আন্দোলন সীমাবদ্ধ রাখার এই কৌশল দুই উদ্দেশ্যে নেওয়া হতে পারে—একদিকে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো, অন্যদিকে প্রশাসনের প্রতিরোধকে কেন্দ্রীয়ভাবে মোকাবেলা করা।
সরকারি মহল থেকে এখনও এ কর্মসূচি নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণভাবে পরিস্থিতি নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। সাইবার ও গোয়েন্দা বিভাগকেও সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে, যাতে কোনো ধরনের উস্কানিমূলক প্রচার ছড়িয়ে পড়তে না পারে।
শাহবাগ মোড়কে কেন্দ্র করে বিকেল ৩টার দিকেই জমায়েত হতে শুরু করবে আন্দোলনকারীরা। এনসিপি ছাড়াও বিভিন্ন ছাত্র ও নাগরিক সংগঠন, ইসলামী দলসমূহ এবং স্বতন্ত্র যুব সংগঠনগুলো এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই আন্দোলনের সফলতা বা ব্যর্থতা আগামী জাতীয় রাজনীতির গতিপথ অনেকাংশেই নির্ধারণ করতে পারে।