স্বাস্থ্যখাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং শীঘ্রই এ সকল উদ্যোগের সুফল পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। বৃহস্পতিবার বিকালে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান প্রমুখ।
নূরজাহান বেগম বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের সুষ্ঠু চিকিৎসার জন্য সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ১৩,৮১১ জন আহত হন এবং তাদের মধ্যে ১২,০৪২ জনের নাম গেজেটে প্রকাশিত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৪০ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সহযোগিতায় মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশের ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আরও আহত রোগীকে বিদেশে প্রেরণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে ৭৮ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছে। দেশের চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়ার পরও সিঙ্গাপুর, নেপাল, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, যুক্তরাজ্য ও থাইল্যান্ড থেকে ২৬ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বাংলাদেশে এসে আহতদের চিকিৎসা প্রদান করেছেন।
স্বাস্থ্যখাতে চিকিৎসক সংকট নিরসনে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে প্রায় ৭ হাজার চিকিৎসককে পদোন্নতি প্রদান এবং ৪৮তম বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে ৩,০০০ জন চিকিৎসক নিয়োগের পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
নূরজাহান বেগম বলেন, নতুন স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং অন্যান্য আইনগত সংস্কারের কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে "মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন অধ্যাদেশ, ২০২৫" শিগগিরই অনুমোদিত হবে।
তিনি জানান, চিকিৎসা সরঞ্জামের দাম কমানোর বিষয়ে ইতোমধ্যে হার্টের রিং এবং স্টেন্টের দাম কমানো হয়েছে। ক্যান্সার নিরোধক ওষুধের উপর কর হ্রাস করা হয়েছে।
মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের জন্য সরকার বিশেষ চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করেছে। মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে বিশেষ সেবা চালু করা হয়েছে।
এছাড়া, স্বাস্থ্যখাতে ডিজিটালাইজেশন এবং অন্যান্য উন্নয়নমূলক প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যখাতকে আরও উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতে সামগ্রিক উন্নয়ন আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।