সাতক্ষীরায় হত্যা মামলার পলাতক আসামী রবিউল ইসলাম গ্রেপ্তার..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা avatar   
সাতক্ষীরায় র‍্যাবের অভিযানে হত্যা মামলার পলাতক আসামী রবিউল ইসলাম গ্রেপ্তার। ভূমি বিরোধ সংক্রান্ত এই মামলায় রবিউল দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:

সাতক্ষীরা শহরের সঙ্গীতা মোড় এলাকা থেকে বুধবার  (১৮ জুন '২৫) সকালে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) একটি দল হত্যা মামলার পলাতক আসামী রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে। র‍্যাব-৬ এর সাতক্ষীরা অফিস থেকে প্রাপ্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, রবিউল ইসলাম সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া ইউনিয়নের নোড়ার চকের বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে এবং তিনি ২০২৪ সালের পহেলা নভেম্বরের খলিষাখালির ভূমিহীন নেতা কামরুল গাজী হত্যা মামলায় পলাতক ছিলেন।  

র‍্যাবের সূত্র অনুযায়ী, রবিউল ইসলামকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে দেবহাটা থানার জিআর-১২৮/২২, ১১১/২২, ১২৭/২২, ৭০৩/১৯ এবং ২৭৩/১৫ নং মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। তাকে গ্রেপ্তার করে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া জানিয়েছেন, রবিউলকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।  

রবিউল ইসলাম তার গ্রেপ্তারের পর জানান, তিনি খলিষাখালি ভূমিহীন পল্লীতে ভূমিহীনদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে গিয়ে বারবার হামলার শিকার হয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, সখীপুরের আইডিয়ালের নজরুল ইসলাম, আব্দুল আজিজ, শিমুলিয়ার কাজী গোলাম ওয়ারেশ এবং আহছানিয়া মিশনের ইকবাল মাসুদসহ কয়েকজন তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে হয়রানি করেছেন।  

প্রেক্ষাপট হিসেবে জানা যায়, ১৯৫৫ সাল থেকে পারুলিয়ার চণ্ডিচরণ ঘোষের খলিষাখালির ১৩১৮ বিঘা জমি নিয়ে বিভিন্ন মহলের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। মুক্তিযোদ্ধা জনাব আলী ২০১০ সালে ওই জমি খাস করার দাবিতে মামলা দায়ের করেন এবং আদালত জমিটি লাওয়ারিশ ঘোষণা করে। এ রায়ের বিরুদ্ধে মালিক দাবিদাররা সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলেও তাদের বিপক্ষে রায় আসে। এরপর ভূমিহীন পরিবারগুলো সেখানে বসবাস শুরু করে।  

তবে এই জমি নিয়ে ভূমিদস্যুদের সঙ্গে ভূমিহীনদের বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করে। ভূমিহীনদের একাংশের নেতা আকরাম, গফুর, ইসমাইল মেম্বর, সাইফুল ও কামরুলদের বিরোধিতা করতে গিয়ে আনারুল, রবিউল, শহীদুল, বুল্লা ও হালিমসহ কয়েকজনের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় কামরুল গাজীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরবর্তীতে ওই হত্যার ঘটনায় ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।  

এদিকে, শনিবারে আটক রবিউল ইসলাম ও অন্যান্য ভূমিহীন নেতারা অভিযোগ করেছেন যে, তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলি মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যমূলক। তারা দাবি করেন, ভূমিহীনদের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় তাদেরকে দমন করার জন্য এসব মামলা করা হয়েছে।  

আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন ভূমি বিরোধ সংক্রান্ত বিষয়গুলো সমাধানের জন্য সচেষ্ট রয়েছে। তবে ভূমি বিরোধের কারণে সংঘাত ও সহিংসতা অব্যাহত থাকায় স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ বিরাজ করছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।

لم يتم العثور على تعليقات


News Card Generator