close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

সাতক্ষীরার বিছট গ্রামের বেড়িবাঁধ ভাঙ্গন: জরুরি মেরামতের দাবি..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা avatar   
সাতক্ষীরার বিছট গ্রামে খোলপেটুয়া নদীর জোয়ারে বেড়িবাঁধের ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে, যা স্থানীয়দের আতঙ্কিত করেছে..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা :

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বিছট গ্রামের সাহেব আলী মোড়লের বাড়ির নিকটবর্তী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধে সাম্প্রতিক সময়ে বড় ধরনের ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। খোলপেটুয়া নদীর প্রবল জোয়ারের কারণে যেকোনো মুহূর্তে এই বেড়িবাঁধ ভেঙে আনুলিয়াসহ পাশ্ববর্তী খাজরা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে এলাকার বাসিন্দারা গভীর উদ্বেগে রয়েছেন। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড -২ এর আওতাধীন ৭/২ পোল্ডারের বিছট গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছ থেকে বিছট খেয়াঘাট পর্যন্ত বেড়িবাঁধের ভাঙ্গন দীর্ঘদিনের সমস্যা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াও খোলপেটুয়া নদীর প্রবল জোয়ারের কারণে প্রায় প্রতিবারই এই বাঁধের কোনো না কোনো স্থান থেকে ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢোকে। 

পাউবো কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে বাঁধটি সঠিকভাবে মেরামত করা হয়নি। ভাঙ্গন প্রতিরোধে শুধু ভাঙ্গন ঘটলে একজন ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজ শুরু করা হয়। ইতোমধ্যে বিছট গ্রামের পঞ্চাশের অধিক পরিবার বাস্তচ্যুত হয়ে অন্যত্র চলে গেছে। নদীতে বিলিন হয়ে গেছে বিছট মোড়ল বাড়ি জামে মসজিদ, ইফতেদায়ী মাদ্রাসা, সরকারি পুকুর, গাজী বাড়ী মসজিদসহ অসংখ্য বাড়িঘর ও ফসলি জমি। বর্তমানে হুমকির মুখে রয়েছে বিকছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও। 

স্থানীয় বাসিন্দা রুহুল আমিন মোরল এবং জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই সাহেব আলী মোরলের বাড়ির সামনে বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ফাটল দেখা দেয়। বাঁধের ফাটলের একটি অংশ নদীতে ধ্বসে পড়েছে। যদিও বাঁধ মেরামতের জন্য রমজান ঈদের আগে একজন ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছিল, তবে এখনো কাজ শুরু করা হয়নি। 

বিষয়টি পাউবো কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তারা কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। দ্রুত এই বাঁধ মেরামতে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে বিছট গ্রামে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। এলাকার বাসিন্দারা তাদের জানমাল রক্ষার জন্য দ্রুত বাঁধ মেরামতের দাবি জানিয়েছেন। 

বিছট গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, 'বেড়িবাঁধের ভাঙনের বিষয়টি পাউবো কর্তৃপক্ষ জানেন, কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। দ্রুত ভাঙন পয়েন্টে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং না করলে সামনের বড় জোয়ারে এই বাঁধ রক্ষা করা যাবে না।' 

আনুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রুহুল কুদ্দুস বলেন, 'গত ৩১ মার্চ বিছট গ্রামে বাঁধ ভেঙে আমার ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিছট ও মনিপুর গ্রামে বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমি নিজে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিসে গিয়ে এসও আলমগীর এবং এসডি রাশেদুল ইসলামকে জানিয়েছি।' 

সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রহমান তাযকিয়া বলেন, 'খবর পেয়ে দু'জন সেকশনাল অফিসারকে নিয়ে আমি নিজে বিছট গ্রামের ভাঙ্গন পয়েন্ট পরিদর্শন করেছি। শুক্রবার থেকে ঠিকাদার ভাঙ্গন পয়েন্টে কাজ শুরু করেছে এবং ভাঙ্গন প্রতিরোধে সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হবে। এছাড়া ভাঙ্গন পয়েন্টের ল্যান্ড সাইডে একটি জিও টিউব দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আশা করছি দ্রুত এ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।' 

এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দারা পাউবো কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ আশা করছেন।

No comments found