সাতক্ষীরায় 'পার্সেল বয় বাবু'র মহতী উদ্যোগ: অসহায়দের জন্য বিনামূল্যে খাবার বিতরণ..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা avatar   
সাতক্ষীরার পার্সেল বয় বাবু প্রতি বৃহস্পতিবার অসহায়দের জন্য বিনামূল্যে খাবার বিতরণের মহতী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:

সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া লস্কর পাড়ার বাসিন্দা বাবু গাজী, যিনি 'পার্সেল বয় বাবু' নামেই অধিক পরিচিত, গত তিন বছর ধরে অসহায় ও দরিদ্র মানুষের জন্য বিনামূল্যে খাবার বিতরণ করে আসছেন। প্রতিটি বৃহস্পতিবার দুপুরে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে পথশিশু, মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি, ভিক্ষুক ও হতদরিদ্র মানুষদের জন্য তিনি নিজ উদ্যোগে খাবার পরিবেশন করেন। এই মহতী উদ্যোগের পেছনে রয়েছে তার আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আকাঙ্ক্ষা।

প্রতিদিনের জীবনের অংশ হিসেবে, বাবু এই কার্যক্রম শুরু করেছিলেন মাত্র ৩০-৪০ জন মানুষের মাধ্যমে, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সংখ্যা এখন ৭০ থেকে ১০০ জনে পৌঁছে গেছে। বাবু গাজী জানান, 'আল্লাহ আমাকে যতদিন তৌফিক দেন, ততদিন আমি এভাবেই মানুষের খেদমত করতে চাই। আমার ইচ্ছা এটি চলমান থাকবে সারাজীবন।'

এই উদ্যোগের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, পুরো কার্যক্রমটি বাবু তার পরিবারের সহযোগিতায় পরিচালনা করেন। তার মা ও স্ত্রী তাকে এই মহতী কাজে সহায়তা করে যাচ্ছেন। বাবুর মতে, এই কার্যক্রমে তার পরিবার ছাড়া অন্য কারো সাহায্য তিনি নেন না। প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন রকমের খাবার যেমন মাছ-ভাত, মাংসের খিচুড়ি ইত্যাদি প্রস্তুত করা হয়।

বাবুর এই উদ্যোগ ইতোমধ্যে সাতক্ষীরা শহরে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে। সংগ্রাম পত্রিকার সাতক্ষীরা প্রতিবেদক আবু সাঈদ বিশ্বাসও এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং বলেন, 'বাবু গাজীর এমন উদ্যোগটি ইতোমধ্যে সাতক্ষীরা শহরে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তার কারণে অনেক অসহায় গরিব ও ক্ষুধার্থ মানুষ সপ্তাহে অন্তত একদিন ভালো খাবার খেতে পারছে।'

বিশ্বাস আরও বলেন, 'আমাদের সমাজে এমন অনেক কোটিপতি আছেন যাদের অঢেল সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও এমন উদ্যোগ নেন না। তাই বাবু গাজীর এমন উদ্যোগকে অবশ্যই সাধুবাদ জানাই।' তিনি আশা প্রকাশ করেন যে বাবু গাজীর এই মহতী উদ্যোগ দেখে সমাজের বিত্তবানরাও এগিয়ে আসবেন।

সাতক্ষীরার এই মহতী উদ্যোগ সমাজের দারিদ্র্য ও খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বাবুর প্রচেষ্টা সমাজের অন্যান্যদের জন্য একটি উদাহরণ হিসেবে কাজ করবে এবং মানবসেবার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা যায়।

لم يتم العثور على تعليقات