close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

সারজিস-হাসনাতকে ১০০ বার ফোন দিলেও রিসিভ করে না: শ হী দ আবদুল্লাহর মায়ের অভিযোগ....

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রাজপথে প্রাণ হারানো কিশোর আবদুল্লাহ বিন জাহিদের মা অভিযোগ করেছেন, যারা তার ছেলের আত্মত্যাগের পর নেতৃত্বে এসেছেন, তারা একবারও খোঁজ নেননি। কান্নাভেজা কণ্ঠে তিনি জানান, শতবার ফোন দিলেও সারজিস-হাসনাতরা কো..

যাদের জন্য আমার ছেলে শহীদ হলো, আজ তারাই আমাদের খোঁজ নেয় না’—আক্ষেপের কণ্ঠে কথা বলছিলেন এক সন্তানের রক্তে ভেজা মা ফাতেমা তুজ জোহরা। রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপির আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এক হৃদয়বিদারক বর্ণনা তুলে ধরেন।

তিনি জানান, তার বড় ছেলে আবদুল্লাহ বিন জাহিদ ছিলেন মাত্র ১৭ বছর বয়সী। জুলাই মাসে সরকারবিরোধী অভ্যুত্থানের সময়, ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় ঢাকা বিমানবন্দর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারায় সে। মা হিসেবে ছেলের এ আত্মত্যাগ কোনো দিন ভুলতে পারবেন না, তবে যে মানুষগুলো আন্দোলনের ফসল ভোগ করছেন, তাদের নির্লিপ্ততা তাকে আরও কষ্ট দিচ্ছে।

“আমি ১০০ বার ফোন দিয়েছি সারজিস আলম আর হাসনাত আব্দুল্লাহকে। একবারও রিসিভ করেনি। ছেলের রক্ত দিয়েছি, এখন শুধু একটু খোঁজ চেয়েছিলাম। সেটুকু পাওয়ারও যোগ্যতা কি আমরা হারিয়ে ফেলেছি?—বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

এই সময় তিনি জানান, বড় ছেলের মৃত্যুর মাত্র দুই সপ্তাহ পর ছোট ছেলের ক্যান্সার ধরা পড়ে। মাত্র ১৪ বছরের শিশুটি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখানেই শেষ নয়, পরিবারটি যেন শোক আর অসহায়তার মধ্যে ডুবে ছিল। কারণ, চলতি বছরের ১৮ মে, তার স্বামীও মারা যান ব্রেন স্ট্রোকে।

তিনি বলেন, “আমার সংসারে এখন একজনই আশার আলো—আমার ছোট ছেলে। ওর আগামী শুক্রবার অপারেশন। আপনারা দোয়া করবেন, যেন ওকে আর না হারাই।

ফাতেমা তুজ জোহরা এ কথাগুলো বলেন বিএনপি আয়োজিত ‘গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায়। তার বক্তব্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেককেই আবেগাপ্লুত করে তোলে। সভাস্থলে উপস্থিত রাজনৈতিক নেতারা তাকিয়ে ছিলেন নীরব, কারও মুখে কোনো জবাব ছিল না।

তিনি আরও বলেন, “যদি বিএনপি পরিবার পাশে না থাকত, আমার ছেলে বাঁচত না, আমি হয়তো রাস্তার পাশে ভিক্ষা করতাম।

এ সময় তিনি বিএনপিকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, তার ছোট ছেলের চিকিৎসার খরচ ও খোঁজ-খবর রাখছেন দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।

এই আলোচনায় ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলীয় চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
সভায় সভাপতিত্ব করেন রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন—

  • মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (মহাসচিব)

  • মির্জা আব্বাস

  • ড. আবদুল মঈন খান

  • নজরুল ইসলাম খান

  • আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী

  • সালাহউদ্দিন আহমেদ

  • এজেডএম জাহিদ হোসেনসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর বিএনপি নেতারা।

জাতীয় নাগরিক পার্টির গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বে থাকা সারজিস ও হাসনাতের প্রতি একজন শহীদ মায়ের এই আহ্বান, শুধু একটি ফোন রিসিভ করার মত মানবিকতা নিয়েও যেন রাজনীতিবিদরা ভাবেন। যে কিশোর রক্ত দিয়ে একটি আন্দোলনকে তীব্রতা দিয়েছিল, তার পরিবারের পাশে দাঁড়ানো যেমন রাজনৈতিক দায়িত্ব, তেমনি মানবিক চেতনারও পরীক্ষা।

No se encontraron comentarios


News Card Generator