দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সততা, শৃঙ্খলা ও আত্মত্যাগের চেতনায় বলীয়ান হয়ে সর্বদা প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি বলেন, “নবীন কর্মকর্তাদের উচিত দেশের প্রতি সর্বোচ্চ দায়িত্ববোধ নিয়ে সবসময় প্রস্তুত থাকা। কারণ একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে তাদেরকেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে।”
রোববার সকালে চট্টগ্রামের বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গ্রীষ্মকালীন রাষ্ট্রপতির কুচকাওয়াজ–২০২৫-এ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সেনাপ্রধান একটি খোলা জিপে করে প্যারেড পরিদর্শন করেন। এসময় নবীন কর্মকর্তাদের আটটি প্লাটুন তাকে সশ্রদ্ধ সালাম জানায়। বিশুদ্ধ সামরিক অনুশাসনে অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজে সেনাপ্রধান প্রশিক্ষণে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী কর্মকর্তাদের হাতে সম্মাননা ও পুরস্কার তুলে দেন। এতে কুচকাওয়াজের অনন্য দৃশ্য ও উদ্দীপনাময় পরিবেশ উপস্থিত অতিথিদের মুগ্ধ করে।
সেনাবাহিনী প্রধান তার ভাষণে বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী আজ একটি আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর ও ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপান্তরিত হয়েছে। দেশের সমুদ্রসীমা রক্ষা, সমুদ্রসম্পদ সুরক্ষা এবং সমুদ্রপথে অপরাধ দমন ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে বাহিনীটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।
তিনি আরও বলেন, “বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সমুদ্র-সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনার গুরুত্ব দিন দিন বেড়েই চলেছে। এর প্রেক্ষিতে নৌবাহিনীর সক্ষমতা আরও বাড়াতে সরকার নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে।”
২০২৫ সালের গ্রীষ্মকালীন রাষ্ট্রপতির কুচকাওয়াজে এ বছর মোট ৫২ জন নবীন কর্মকর্তা কমিশন লাভ করেন। এদের মধ্যে ৪৪ জন মিডশিপম্যান এবং ৮ জন ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার। উল্লেখযোগ্যভাবে, কমিশনপ্রাপ্তদের মধ্যে ৮ জন নারী এবং ৪ জন বিদেশি কর্মকর্তা রয়েছেন, যা বাহিনীর বৈচিত্র্য এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রতিফলন ঘটায়।
অনুষ্ঠানে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কূটনীতিক, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রচণ্ড গরম ও বর্ষার মাঝামাঝি এই সময়েও অনুষ্ঠানের শৃঙ্খলা ও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন বাহিনীর দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেন অতিথিরা।
সেনাপ্রধান তার বক্তব্যের শেষাংশে নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে বলেন, “আপনাদের হাতেই ভবিষ্যতের বাংলাদেশ। দেশের জন্য কাজ করাই হবে আপনাদের সবচেয়ে বড় কর্তব্য ও গর্ব।”