‘সাম্য হত্যার বিচার চাই, জবাব দিতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে’‘সাম্য হত্যার বিচার চাই, জবাব দিতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে’..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। এই নির্মম ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে ছাত্রদল ও বিএনপি। মির্জা ফখরুল বলছেন, “এটা শুধু হত্যাকাণ্ড নয়, হাজারো..

ঢাবি ছাত্র সাম্যর হত্যায় উত্তাল রাজনীতি: বিচার দাবিতে ফুঁসে উঠেছে ছাত্রদল

রাজধানী ঢাকায় ফের ছুরিকাঘাতে রক্ত ঝরল তরুণ নেতৃত্বের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্য (২৫) নির্মমভাবে ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কাছে দুর্বৃত্তরা তার ওপর হামলা চালায়।

মৃত্যুর কিছুক্ষণ পরই ঢাবির চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। বিশেষ করে ছাত্রদলের কর্মীরা রাতেই মিছিল-বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।

বিচারের দাবিতে জবাবদিহির আওতায় চায় অন্তর্বর্তী সরকারকে

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ বুধবার সকালে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক আবেগঘন পোস্ট দিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জবাব চান।

তিনি লেখেন—
“সে আর সোজা হয়ে দাঁড়াবে না, আর কোনো কনসার্টে যাবে না, গানের তালে নাচবে না, স্বপ্ন দেখবে না আর নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে।”
এমন হৃদয়বিদারক শব্দে ফুটে ওঠে একটি তরুণ প্রাণের অপমৃত্যুর বেদনা। ফখরুল আরও বলেন, “এটা শুধু একজন মানুষের হত্যা ছিল না, এটা ছিল হাজারো স্বপ্নের মৃত্যু। আমরা আমাদের ছেলে সাম্য’র জন্য বিচার চাই। আমাদের সন্তানের হত্যার বিচার চাই। জবাব দিতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে।”

কে এই সাম্য?

সাম্য ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানায়। সহপাঠীদের মতে, তিনি ছিলেন সংস্কৃতিমনা, সংগঠনে সক্রিয় এবং বন্ধুদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় একজন তরুণ। তার আকস্মিক মৃত্যু সবাইকে স্তব্ধ করে দিয়েছে।

বিক্ষোভ, সমাবেশ ও ছাত্রদলের প্রতিক্রিয়া

হত্যাকাণ্ডের পরপরই তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রদল। রাতেই ক্যাম্পাস চত্বর ঘিরে প্রতিবাদী স্লোগানে মুখর ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির, ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস এবং সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় ও হল পর্যায়ের নেতারা।

আজ বুধবার দুপুর ১২টায় ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের সামনে একটি বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। জানা গেছে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে।

রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রতিক্রিয়া

সাম্যের হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে জাতীয় রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বিশেষ করে বিএনপি এবং ছাত্রদল এটিকে “রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি” হিসেবে উল্লেখ করছে। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এই হত্যার পেছনের চক্রান্তকারীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন।

উপসংহার:

একজন তরুণ ছাত্রনেতা, যার সামনে ছিল উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ—সেই সাম্য আজ মৃত। তার রক্ত যেন প্রশ্ন রাখে, “কেন?”
এই হত্যার জবাব কে দেবে? বিচার কি আদৌ হবে? নাকি এও ইতিহাসের আরেকটি অন্ধকার পৃষ্ঠায় হারিয়ে যাবে?

Nessun commento trovato