সাম্য হ'ত্যা'কা'ণ্ড: পুলিশের অস্পষ্ট ব্যাখ্যায় বি'ভ্রান্ত জনগণ, ঢাবি ছাত্রদলের সরব প্র'তি'বা'দ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঢাবি ছাত্রদলের অভিযোগ—শিক্ষার্থী সাম্যকে ঘিরে পুলিশের সংবাদ সম্মেলন ছিল অসংলগ্ন ও বিভ্রান্তিকর। প্রকৃত রহস্য আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। প্রশাসনের নির্লিপ্ততা নিয়ে উঠছে গুরুতর প্রশ্ন।..

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশের ভূমিকা ও তথ্য উপস্থাপনা নিয়ে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল।

শনিবার (৩১ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানায়। সংবাদ সম্মেলনের বিষয়বস্তু ছিল “সাম্য হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিষয়াবলী”। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস।

লিখিত বক্তব্যে সাহস জানান, "সাম্য হত্যাকাণ্ডে তদন্ত প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই এক ধরনের অস্বচ্ছতা ও ধীরগতি দেখা গেছে। ঘটনার প্রায় ১৩ দিন পরে ডিএমপি কমিশনার সংবাদ সম্মেলন করে যে ব্যাখ্যা দেন, সেটি অত্যন্ত অস্পষ্ট ও বিভ্রান্তিকর। সেখানে বলা হয় সাম্যকে হত্যা করা হয় হত্যাকারীদের কাছে থাকা একটি ছোট টেজার গান নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের জেরে। কিন্তু এটি বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে।"

তিনি আরও বলেন, “সাম্য ছিলেন পরিচিত ছাত্রনেতা এবং একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। কেবল একটি তুচ্ছ ইলেকট্রিক ডিভাইসের কারণে তাঁকে ‘অতি পেশাদার’ কায়দায় হত্যা করা হয়েছে—এটা মানা যায় না। এর পেছনে অন্য কোনো ষড়যন্ত্র বা উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, সে প্রশ্নে পুলিশ সম্পূর্ণ নীরব থেকেছে।”

ঢাবি ছাত্রদল জানায়, এখন পর্যন্ত হত্যার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন হয়নি। অথচ ডিএমপি বলছে, তারা তদন্ত শেষ করেছে। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের উপস্থাপিত তথ্য ছিল অসংলগ্ন, যা জনগণের মধ্যে আরও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। শুধু তাই নয়, সাম্যের পরিবারও পুলিশের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয় এবং তারা উল্টো ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

ছাত্রদল সভাপতি বলেন, “এই হত্যাকাণ্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। স্বাধীন মতপ্রকাশ ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের যে দাবি আমরা দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছি, তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিশ্চিতে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছে।”

লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, “আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনের প্রভাবে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দমন-পীড়নের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। প্রশাসন চোখ বুজে রেখেছে, বরং কখনো কখনো নির্যাতনের অংশীদার হিসেবেও তারা কাজ করছে।”

সংবাদ সম্মেলনে ঢাবি ছাত্রদল উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করে বলেন, “বর্তমান প্রশাসন নিরাপদ ও গণতান্ত্রিক শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দায়িত্ব এমন কারও হাতে থাকা উচিত, যিনি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী হবেন।”

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাবি ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। তাঁরা বলেন, সাম্য হত্যার সুষ্ঠু বিচার না হলে ক্যাম্পাসে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে এবং প্রশাসনের উদাসীনতা ও পুলিশের পক্ষপাতিত্বের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াবে।

No se encontraron comentarios


News Card Generator