সাইকেলে চেপে পদ্মা সেতু জয়! নিরাপত্তা ভেদ করে বেপরোয়া যুবক, শেষমেশ ধরা
পদ্মা সেতু—বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও প্রতীকী একটি প্রকল্প। যেখানে সুরক্ষা ব্যবস্থা কঠোর এবং সর্বদা সতর্ক। কিন্তু সম্প্রতি একটি বিস্ময়কর ঘটনা ঘটেছে এই সেতুতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবক তার সাইকেল নিয়ে দ্রুতগতিতে সেতুর ওপর দিয়ে ছুটছেন। আর সেই দৃশ্য রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছে নেটিজেনদের।
ভিডিওতে দেখা গেছে, যুবকটি সেতুর দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সাইকেল নিয়ে উঠেছেন পদ্মা সেতুতে। দৃশ্যটি এতটাই হঠাৎ এবং অবিশ্বাস্য ছিল যে নিরাপত্তাকর্মীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনি বেশ কিছু দূর এগিয়ে যান। এরপর দ্রুত পদক্ষেপ নেয় নিরাপত্তা বাহিনী। তারা গাড়িতে করে ধাওয়া করে অবশেষে ওই যুবককে থামাতে সক্ষম হন।
ধৃত যুবকের নাম আবুল কালাম। তার বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলায়। নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি। তিনি নীরব থাকেন এবং চোখ-মুখে ছিল এক ধরনের অদ্ভুত স্থিরতা। তার এই আচরণ দেখে অনেকেই ধারণা করছেন, যুবকটি মানসিক ভারসাম্যহীন।
যদিও তার মানসিক অবস্থার বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানা যায়নি, তবে এই ঘটনার পর তার পরিচয় নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দফতর থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে পরিবার ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে।
সেতু কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার পর নিরাপত্তা আরও জোরদার করার আশ্বাস দিয়েছে। তারা জানিয়েছেন, "সাধারণত পদ্মা সেতুতে সাইকেল বা পায়ে হেঁটে ওঠা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এই যুবক কিভাবে ওঠার সুযোগ পেল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধে বাড়তি নজরদারি চালানো হবে।"
এই ঘটনা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ কেউ বলছেন, "যুবকের সাহস সত্যিই অবিশ্বাস্য, তবে এটি ছিল ভয়ংকর ঝুঁকিপূর্ণ কাজ।" আবার অনেকেই মন্তব্য করছেন, "মানসিক ভারসাম্যহীন হলে তাকে সহানুভূতির চোখে দেখা উচিত, প্রশাসনের উচিত তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।"
পদ্মা সেতুর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এই ধরনের নিরাপত্তা ফাঁকি প্রশ্ন তুলেছে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর। একই সঙ্গে এটি আবারও প্রমাণ করেছে, অপ্রত্যাশিত ঘটনা যেকোনো সময় ঘটতে পারে এবং তার জন্য প্রস্তুত থাকা জরুরি।
উপসংহার:
পদ্মা সেতুতে সাইকেল নিয়ে ওঠার এই ঘটনায় যেভাবে নিরাপত্তা কর্মীরা তৎপরতা দেখিয়েছেন, তা প্রশংসার দাবিদার। তবে একইসঙ্গে এ ঘটনা দেখিয়ে দিলো যে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আরও কড়া নজরদারি প্রয়োজন। আবুল কালাম নামে এই যুবকের আসল উদ্দেশ্য এবং মানসিক অবস্থা তদন্তের মাধ্যমে স্পষ্ট হলে হয়তো উঠে আসবে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য।