সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী নদী গ্রেপ্তার: নিষিদ্ধ সংগঠনের একাধিক অভিযোগে ডিবির অভিযান


নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শামসুন্নাহার হল শাখার সাবেক সহসভাপতি নিশিতা ইকবাল নদীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) রেজাউল মল্লিক।
রেজাউল মল্লিক গণমাধ্যমকে জানান, “সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এবং প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি নিশিতা ইকবাল নদীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।”
প্রেক্ষাপট
গত ২৩ অক্টোবর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বাংলাদেশ সরকার একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো ছাত্র সংগঠনটি বিগত সময়ে সংঘাতময় কার্যক্রমের কারণে ব্যাপক সমালোচিত হয়।
ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের কারণ
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয় যে, স্বাধীনতা-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে গত ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন, গণরুম দখল, সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ এবং যৌন নিপীড়নসহ নানা ধরণের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। এসব কর্মকাণ্ডে সংগঠনের নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং আদালতের রায়ে উঠে এসেছে।
২০০৯ সালের পরের ছাত্রলীগের ভূমিকা
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টির অভিযোগ উঠে। দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাদের আধিপত্য বিস্তারের ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নানা ধরনের নির্যাতন চালানো হয়। ছাত্র-জনতার চলমান আন্দোলনের শুরুর দিকেও ছাত্রলীগের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত বিতর্কিত। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর চালানো সহিংসতা দেশের জনগণকে ক্ষুব্ধ করে তোলে।
নদীর গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে
নিশিতা ইকবাল নদীকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ আবারও জানিয়ে দিল যে, ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ কার্যক্রমে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। তাকে কোন মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিংবা পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনও বিস্তারিত জানায়নি।
জনসাধারণের মনে এখন প্রশ্ন, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পরও এর নেতাকর্মীদের বিচ্ছিন্ন অপতৎপরতা বন্ধে সরকার কতটা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
No se encontraron comentarios