close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ৫৭৬ কোটি টাকার সম্পদ অবরুদ্ধ, জালিয়াতির তদন্তে হাইপ্রোফাইল একশন..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
A Dhaka court has frozen BO accounts worth Tk 576 crore belonging to former Land Minister Saifuzzaman Chowdhury and his associates amid money laundering investigations by ACC and other state agencies.

দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার ঘনিষ্ঠদের ৫৭৬ কোটি টাকার বিও হিসাব অবরুদ্ধ করেছে আদালত। অর্থ পাচারের অভিযোগে শুরু হয়েছে যৌথ তদন্ত।

সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তার ঘনিষ্ঠদের নামে থাকা ৫৭৬ কোটি ৮ লাখ ৭৭ হাজার ৭৩০ টাকার বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। এই নির্দেশের পেছনে রয়েছে অর্থ পাচার, জালিয়াতি এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগ।

২০২৫ সালের ৯ জুলাই (বুধবার), ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিব দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন। দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. তানজির আহমেদ গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

দুদকের পক্ষ থেকে উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান এই আবেদন করেন। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ২৬টি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে একটি যৌথ অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিমে রয়েছে দুদক, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর প্রতিনিধিরা।

তদন্তে দেখা যায়, সাইফুজ্জামান ও তার নিকট আত্মীয়দের নামে বিপুল অঙ্কের শেয়ার বা সিকিউরিটিজ সংক্রান্ত বিও হিসাব রয়েছে। এসব হিসাব থেকে টাকা নগদায়নের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ ওঠে। ফলে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে—এই যুক্তিতে আদালতের কাছে এসব হিসাব অবরুদ্ধ করার আবেদন জানানো হয়।

অবরুদ্ধ হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন—সাইফুজ্জামানের স্ত্রী রুখমিলা জামান চৌধুরী, বসির আহমেদ, আনিসুজ্জামান চৌধুরী, এম. এ. সবুর, বজল আহমেদ, নুরুল ইসলাম চৌধুরী ও আসিফুজ্জামান চৌধুরী। তাদের সবাই সাইফুজ্জামানের পরিবার, ব্যবসায়িক অংশীদার অথবা নিকটজন।

আদালত ওই আবেদনের যথার্থতা যাচাই করে সকল ২৬টি বিও অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন। ফলে এখন তারা এসব অ্যাকাউন্ট থেকে কোনো টাকা উত্তোলন, স্থানান্তর বা লেনদেন করতে পারবেন না।

এর আগেও আওয়ামী লীগ সরকার বিদায় নেওয়ার পর সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রীর নামে থাকা সব ধরনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। অর্থাৎ, এটি তার বিরুদ্ধে নেওয়া দ্বিতীয় বড় ধরনের আর্থিক নিষেধাজ্ঞা।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৩ সালের উপ-নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ২০১৪ সালের ১০ম জাতীয় সংসদে চট্টগ্রাম-১৩ আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে প্রতিমন্ত্রী হন। এরপর ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। ২০২৪ সালের ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও চট্টগ্রাম-১৩ আসন থেকে জয়ী হন।

তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ এবং বিপুল অর্থসম্পদের অনুসন্ধান দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি হতে পারে দুর্নীতি দমনে নতুন সরকারের কঠোর অবস্থানের প্রাথমিক উদাহরণ।

প্রসঙ্গত, বিও হিসাব হলো বিনিয়োগকারীদের সিকিউরিটিজ সংরক্ষণের একটি ডিজিটাল মাধ্যম। শেয়ার বাজারে লেনদেনের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এত বিশাল পরিমাণ অর্থ এই মাধ্যমে জমা থাকার বিষয়টি সাধারণ মানুষের মধ্যেও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

নতুন সরকার যদি এই মামলার অনুসন্ধান স্বচ্ছভাবে চালায় এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়, তবে তা দেশের রাজনৈতিক ও আর্থিক ব্যবস্থার জন্য এক বড় পরিবর্তনের সূচনা হতে পারে বলে বিশ্লেষকদের মত।

کوئی تبصرہ نہیں ملا