রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের নামে আইওয়াশ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে শুরু হয়েছে টানাটানি—এভাবেই ফেসবুক পোস্টে সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন।
বৃহস্পতিবার (১ মে) রাতে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, "এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানোর মিথ্যা গল্প বলে জনগণকে ধোঁকা দেওয়া হয়েছে। বাস্তবে জাতিসংঘের মহাসচিবকে এনে সরকার জনমতকে বিভ্রান্ত করেছে। আর এই ঘটনার আড়ালে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে বড়সড় খেলা শুরু হয়েছে।"
রাশেদ খাঁন বলেন, "যা বুঝতে পারছি, জাতিসংঘ মহাসচিবের উপস্থিতিতে সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা মানবিক করিডোর গড়ে দেবে এবং প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সহায়তা সরবরাহ করবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এ প্রতিশ্রুতির নামে জনগণের চোখে ধুলা দেওয়া হয়েছে।"
তিনি আরও দাবি করেন, “সরকার বলেছে ১৮০ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত পাঠাবে। অথচ এখন তথ্য বলছে, উল্টো ১ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফরের প্রকৃত অর্জন এটুকুই—আর কিছুই নয়।”
স্বাধীনতার প্রশ্নে শঙ্কা!
রাশেদ আরও বলেন, “এখন করিডোর দেওয়ার নামে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপ শুরু হয়েছে। দেশ যেন এক ধরনের নরম দখলের শিকার হচ্ছে—যেখানে বৈদেশিক কূটনীতিকরা অভ্যন্তরীণ নীতিনির্ধারণে সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে।”
বিনিয়োগ আসবে না, উন্নয়নও নয়!
দেশে বিনিয়োগ প্রসঙ্গে রাশেদ খাঁন বলেন, “কিছুদিন আগে ‘বিজনেস সামিট’ নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়েছিল, যেন বিদেশিরা বিনিয়োগ করতে মুখিয়ে আছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত বড় ধরনের কোনও বিনিয়োগ বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা নেই।”
তিনি যোগ করেন, “ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যারের ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতা থাকলেও তা দিয়ে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ আনা সম্ভব নয়। সম্মান ও বিনিয়োগ—এই দুটি সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। বিশ্বে ইউনূস স্যার সম্মানিত হলেও, তার টিমে যে অভাব রয়েছে দক্ষ লোকজনের, তা স্পষ্ট।”
উপদেষ্টা নির্বাচনেও সমালোচনা!
রাশেদ খাঁনের পোস্টে আরও উঠে আসে উপদেষ্টাদের দক্ষতা নিয়ে কঠোর সমালোচনা। তিনি বলেন, “আমাদের একজন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আছেন যিনি ব্যাংকিং সেক্টরে অভিজ্ঞ, অথচ স্বাস্থ্যখাতে তার কোনও অভিজ্ঞতা নেই। ফলে চিকিৎসা খাতের অবস্থা আজ ভয়াবহ। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নতি ছাড়া প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়।”
তিনি অভিযোগ করেন, “আরও কয়েকজন উপদেষ্টা আছেন যাদের অতীত আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাদের কারো কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে—তারা নাকি ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ গঠনের পেছনে সক্রিয় এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার উদ্যোগেও তারা আগ্রহী নয়।”
রাশেদ খাঁনের এই পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে এবং সাধারণ জনগণের মধ্যেও নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে—রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আসলেই কতটা বাস্তবসম্মত, এবং বিদেশি কূটনীতিকদের আগমন কতটা স্বার্থপর।
সরকার এই বিষয়ে কী ব্যাখ্যা দেয় এবং গণ অধিকার পরিষদের এসব অভিযোগের কী জবাব আসে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
 'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  
  
 
		 
				 
			



















 
					     
			 
						 
			 
			 
			 
			 
			 
			