রাষ্ট্র সংস্কার যদি এবার না হয়, কোনোদিন হবে না: রাশেদ খান

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য এখনই সবচেয়ে উপযুক্ত সময় বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। তিনি বলেন, এবার যদি পরিবর্তন না আসে, তাহলে আর কোনোদিনও আসবে না। গণজাগরণ ও ফ্যাসিব..

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে "চূড়ান্ত সুযোগ" আখ্যা দিয়ে রাষ্ট্র সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। তাঁর মতে, এখনই যদি কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র সংস্কার না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে এমন সুযোগ আর আসবে না। জনগণের অংশগ্রহণে একটি গণতান্ত্রিক, ন্যায়ভিত্তিক এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য তিনি জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

বুধবার (৫ জুন) দুপুরে ঝিনাইদহ জেলা শহরে গণসংযোগ ও শোভাযাত্রা চলাকালে এসব কথা বলেন তিনি। শতাধিক মোটরসাইকেল আরোহী নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে শোভাযাত্রাটি ঝিনাইদহ কলেজ ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

রাশেদ খান বলেন, “গণঅভ্যুত্থান তখনই সফল হয়, যখন তার সঙ্গে কাঠামোগত পরিবর্তন আসে। রাষ্ট্র যদি সংস্কার না হয়, তাহলে সেই আন্দোলনের ফলাফল ম্লান হয়ে যাবে।” তিনি জনগণকে আহ্বান জানান, আন্দোলনকে কেবল দলীয় স্বার্থে সীমাবদ্ধ না রেখে রাষ্ট্রের মৌলিক কাঠামো সংস্কারে ভূমিকা রাখতে।

তিনি আরও বলেন, “ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারালেও, তার রেখে যাওয়া ফ্যাসিবাদী প্রশাসনিক কাঠামো এখনো বহাল রয়েছে। প্রশাসনের একাংশ, বিশেষ করে যারা ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচন পরিচালনা করেছে, তারা এখনো ক্ষমতা ও প্রভাবের অপব্যবহার করছে।”

রাশেদ খান অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশে না থেকেও বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি দাবি করেন, “হাসিনা দিল্লিতে বসে তার দলীয় ক্যাডারদের মাঠে নামানোর নতুন চক্রান্ত করছে। তার নির্দেশে সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যবহার করে বিরোধী দল দমন এবং নির্বাচন ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।”

তিনি এ সময় মাঠপর্যায়ের প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নাম না করে বলেন, “যেসব ডিসি-এসপি বারবার ফ্যাসিস্ট নির্বাচনের অংশ হয়েছে, তারা গণতান্ত্রিক পরিবেশ ধ্বংসে নিয়োজিত রয়েছে।”

ভবিষ্যৎ নির্বাচনের প্রসঙ্গে রাশেদ খান বলেন, “এখন সময় এসেছে ভোট রাজনীতিকে শুদ্ধ করার। দুই কেজি গোশত, ১০ কেজি চাল আর ৫০০ টাকার বিনিময়ে ভোট নেয়ার যে রাজনীতি ছিল, মানুষ এখন সেটা প্রত্যাখ্যান করছে।”

তিনি নিজেকে উদাহরণ দিয়ে বলেন, “যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারে যে আমি বা আমার দল চাঁদাবাজি করি, তবে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। আমাদের দরকার ক্লিন ইমেজধারী নেতৃত্ব।”

রাশেদ খান উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, “আমার চেয়েও যদি ভালো প্রার্থী নির্বাচনে আসে, তাহলে তাকেই ভোট দিন। কিন্তু চাঁদাবাজ, মাফিয়া বা দখলদারকে নয়।”

গণঅধিকার পরিষদের ওপর অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর নেতিবাচক আচরণের কথাও তুলে ধরেন রাশেদ খান। তিনি বলেন, “আমাদের প্রতি প্রতিনিয়ত বিরূপ আচরণ করছে কিছু রাজনৈতিক শক্তি। তারা গণতান্ত্রিক পন্থায় প্রতিযোগিতা করতে না পেরে এখন প্রতিহিংসামূলক পথে আমাদের প্রতিহত করতে চাচ্ছে।”

তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, “আমাদের আন্দোলন থামানো যাবে না। আমি কোথাও ভুল করলে আমাকে বলেন, আমি সংশোধন করবো। কিন্তু ষড়যন্ত্র করে প্রতিহত করার ফল শুভ হবে না।”

এ সময় গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল জাহিদ রাজন, শৈলকূপা উপজেলা সভাপতি মেহেদী হাসান এবং যুব অধিকার পরিষদের জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মিশন আলী।

Комментариев нет