রাশিয়া ও সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে নতুন যোগাযোগ, সামরিক ঘাঁটি রক্ষা হবে কি

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সিরিয়ার রাজনৈতিক মঞ্চে নতুন এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। রাশিয়া, যার মূল লক্ষ্য সিরিয়ায় তার সামরিক ঘাঁটিগুলি রক্ষা করা, এবার সিরিয়ার অন্যতম প্রধান বিদ্রোহী গোষ্ঠ
সিরিয়ার রাজনৈতিক মঞ্চে নতুন এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। রাশিয়া, যার মূল লক্ষ্য সিরিয়ায় তার সামরিক ঘাঁটিগুলি রক্ষা করা, এবার সিরিয়ার অন্যতম প্রধান বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞরা এটিকে একদিকে যেমন রাশিয়ার কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন, অন্যদিকে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন এক মেরুকরণ তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন। রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মিখাইল বোগদানভ ১২ ডিসেম্বর এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাঁর মতে, রাশিয়া ও এইচটিএসের মধ্যে আলোচনা গঠনমূলকভাবে এগোচ্ছে, যা সিরিয়ার সামরিক ঘাঁটিগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি রক্ষার প্রস্তাব বোগদানভ জানিয়েছেন, রাশিয়া আশা করে, এইচটিএস তাদের অঞ্চলের নিরাপত্তা বজায় রেখে কূটনীতিক এবং অন্যান্য বিদেশি ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। এটি বিশেষভাবে সিরিয়ায় অবস্থিত রাশিয়ার দুইটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটির সুরক্ষার জন্য। একটি নৌঘাঁটি সিরিয়ার তারতস শহরে অবস্থিত, অন্যটি একটি বিমানঘাঁটি, যা সিরিয়ার বন্দরনগরী লাতাকিয়ার কাছে খমেইমিম বিমানঘাঁটি নামে পরিচিত। সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান এবং কূটনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটিগুলোর এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা শুধু সামরিক সুরক্ষা নয়, বরং ইসলামিক স্টেট (আইএস) সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। বোগদানভ স্পষ্টতই উল্লেখ করেছেন যে, সিরিয়ার সরকার রাশিয়াকে এই ঘাঁটিগুলোর স্থাপন করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। সিরিয়ার সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে এই ঘাঁটিগুলোর অবদান অপরিসীম বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, “সন্ত্রাসবিরোধী লড়াই এখনো শেষ হয়নি, এবং আইএসের কিছু অংশ এখনও সক্রিয় রয়েছে।” ইদানীং সিরিয়ার পরিস্থিতি চলতি বছর ২৭ নভেম্বর সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের ইদলিব প্রদেশ থেকে বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে নতুন বিদ্রোহী অভিযান শুরু হয়, যার নেতৃত্ব দেয় এইচটিএস। মাত্র ১২ দিনের মধ্যে বিদ্রোহীরা আলেপ্পো, হামা ও হোমস প্রদেশ দখল করে এবং ৮ ডিসেম্বর দামেস্কে পৌঁছায়। এর ফলে বাশার আল-আসাদের দীর্ঘদিনের শাসনের সমাপ্তি ঘটে এবং প্রেসিডেন্ট আসাদ ও তার পরিবার রাশিয়ায় পালিয়ে যান, যেখানে তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হয়। এই সমস্ত ঘটনার প্রেক্ষাপটে, রাশিয়ার নতুন কূটনৈতিক পদক্ষেপ সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে। সিরিয়ার সংঘাত এবং তার আশেপাশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য আরও পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য রাশিয়া ও জাতিসংঘের বিশেষ দূত গেইর পেডারসেন একযোগে উদ্যোগ নিয়েছে। রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতি এবং রাজনৈতিক কৌশল দেশের পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে, তবে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের অংশ হিসেবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
Không có bình luận nào được tìm thấy