[৩ ডিসেম্বর, ২০২৫] — জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর রাজশাহী জেলা কমিটিতে পদাধিকারী ও কর্মীদের মধ্যে তীব্র অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে। নবগঠিত জেলা কমিটির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলামকে 'স্বৈরাচারের অন্যতম দোসর' আখ্যা দিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে পদত্যাগ করেছেন কমিটির পাঁচ সদস্য। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) পদত্যাগপত্র কেন্দ্রে পাঠানোর মাধ্যমে এই বিদ্রোহ প্রকাশ্যে আসে।
পদত্যাগকারী এই পাঁচ সদস্য হলেন—আজিজুল ইসলাম, মো. আসাদ, মিলন চন্দ্র ঘোষ, মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম এবং মো. নঈম ফকির। গেল ২৯ নভেম্বর ঘোষিত এনসিপি রাজশাহী জেলা কমিটিতে তারা সদস্য পদ পেয়েছিলেন।
পদত্যাগপত্রে এই সদস্যরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাদের মূল আপত্তির জায়গা হলো, যে স্বৈরাচার হটানোর জন্য তারা জুলাই আন্দোলনে সম্মুখের সারিতে থেকে লড়াই করেছেন, সেই স্বৈরাচারের একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী বা 'দোসর' হিসেবে পরিচিত সাইফুল ইসলামকে জেলা কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, কমিটিতে এমন একজনকে সদস্য সচিব করা হয়েছে যার জুলাই আন্দোলনে কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না বলে দাবি করা হয়েছে।
জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না জানিয়ে পদত্যাগকারীরা অবিলম্বে এই কমিটি বিলুপ্ত করার দাবি জানিয়েছেন। তাদের স্পষ্ট বার্তা, কমিটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তাদের পদত্যাগ বহাল থাকবে এবং প্রয়োজনে তারা 'আওয়ামী লীগের দোসরদের' বিরুদ্ধে আবারও রাজপথে নামতে প্রস্তুত।
পদত্যাগকারী সদস্য আজিজুল ইসলাম বলেন, "আমরা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য রাস্তায় লড়াই করেছি। অথচ সেই সরকারেরই একজন দোসরকে কমিটিতে স্থান দেওয়া হলো। আমরা চাই, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অবিলম্বে এই কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করুক।" অন্যদিকে, এনসিপি রাজশাহী জেলা কমিটির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, "এগুলো সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং কমিটিকে বিভ্রান্ত করার জন্য এসব করা হচ্ছে।" এই পদত্যাগ দলের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও ভাবমূর্তির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।



















