রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য কমিটির সপ্তম দিনের বৈঠকে নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে তীব্র আলোচনা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের সপ্তম দিনের বৈঠকে নির্বাচনী এলাকা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকালসহ মৌলিক সংস্কারের বিষয়গুলো আলোচনা চলছে।..

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের সপ্তম দিনের বৈঠক বুধবার (২ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শুরু হয়। এই বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা — সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার ও ড. আইয়ুব মিয়া — উপস্থিত ছিলেন।

আজকের বৈঠকের মূল আলোচ্যসূচি ছিল নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমাপ্রদর্শন। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এখন পর্যন্ত মৌলিক সংস্কারের প্রায় ২০টি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেছে, যার মধ্যে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন, বিরোধী দল থেকে সংসদীয় কমিটির সভাপতি নিয়োগ, ১০০ নারী আসনে সরাসরি ভোট, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রভৃতি বিষয় রয়েছে।

এই আলোচনায় এখন পর্যন্ত ৯টি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, যাদের মধ্যে দুটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, এবং কিছু বিষয়ে আংশিক ঐকমত্য হয়েছে। তবে কোনো প্রস্তাব এখনো বাদ দেয়া হয়নি। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন এবং বিরোধী দল থেকে সংসদীয় কমিটির সভাপতি করার প্রস্তাবে ঐকমত্য হয়েছে।

এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন — এই প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলো মোটামুটি একমত হলেও এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বিএনপি তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে, এনসিসি বা সমমানের কোনো কমিটি সংবিধানে রাখা হবে না, এই শর্ত পূরণ হলে প্রধানমন্ত্রী মেয়াদকালের বিষয়ে তারা মেনে নেবে।

এছাড়া নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাঠামো, সংবিধান সংশোধনের প্রক্রিয়া, জরুরি অবস্থা ঘোষণার নিয়মাবলী, স্থানীয় সরকারে নারী প্রতিনিধিত্ব, উচ্চকক্ষের নির্বাচন পদ্ধতি, জেলা সমন্বয় কাউন্সিল গঠনসহ অন্যান্য বিষয় এখনও আলোচনার অপেক্ষায় রয়েছে।

গত ২৯ জুন বৈঠকের সময় অধ্যাপক আলী রীয়াজ আশা প্রকাশ করেন, ১৬ জুলাই আবু সাঈদের শাহাদাত বার্ষিকীতে জুলাই সনদে রাজনৈতিক দলগুলো স্বাক্ষর করবে। তবে তিনি সতর্ক করেন, বাস্তবে সেটি কতটা সম্ভব হবে তা দলের মনোভাবের উপর নির্ভর করবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই বৈঠকগুলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কারে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে অনেকে আশা করছেন। তবে রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐক্য ও সম্মিলিত সিদ্ধান্তই ভবিষ্যৎ পথ নির্ধারণ করবে।

No se encontraron comentarios