রাজনীতি থেকে বিদায়, মিডিয়ায় থাকছেন হিরো আলম

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
চারবার জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পর হিরো আলম জানালেন রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত। রাজনৈতিক অস্থিরতা, অপমান ও ন্যায়বিচারের অভাবেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানালেন তিনি।..

রাজনীতির মঞ্চ থেকে সরে দাঁড়ালেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত মুখ, হিরো আলম। চারবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের পর অবশেষে রাজনীতিকে বিদায় জানান এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর। তার এই ঘোষণায় রাজনৈতিক মহলে যেমন আলোচনা শুরু হয়েছে, তেমনি তার ভক্ত-সমর্থকদের মাঝেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

শনিবার (১৭ মে) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের শম্ভুপুরা ইউনিয়নের দুর্গাপ্রসাদ এলাকায় স্বপন জেন্টস পার্লারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি বলেন, “আমি আর রাজনীতি করব না। আর কখনো রাজনীতিতে ফিরবো না। এটা আমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।”

হিরো আলম বলেন, “আমি মোট চারবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। এর মধ্যে দুইবার জনগণের বিপুল সমর্থন পেয়েছি। তবে বর্তমানে দেশের রাজনীতির যে পরিবেশ, তাতে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে নির্বাচন করার মতো সাহস বা স্বাভাবিক পরিবেশ নেই। অপমান, লাঞ্চনা, নির্যাতন আর অবিচার আমাকে রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করেছে।”

তিনি আরও বলেন, “রাজনীতিতে প্রবেশ করেছিলাম দেশের মানুষের জন্য কাজ করার উদ্দেশ্যে। আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম একটা পরিবর্তনের। আমি ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়েছি, ছাত্র রাজনীতি করেছি, আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। কিন্তু যাদের জন্য এই সংগ্রাম, সেই জনগণই আমার ছোট ছোট ভুলের জন্য আমাকে গালমন্দ করেছে, ধিক্কার দিয়েছে। এমনকি আদালতের কাছ থেকেও ন্যায়বিচার পাইনি।”

দুর্ভাগ্যজনক অভিজ্ঞতা:
হিরো আলমের ভাষ্যমতে, তার রাজনৈতিক জীবনে যে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে, তা একজন শিল্পী বা সাধারণ নাগরিকের জন্য বেদনাদায়ক। “মানুষের স্বপ্ন থাকে,” বলেন তিনি, “আমারও ছিল। আমি জানতাম, লড়াই করতে হবে। কিন্তু এতটা অবহেলা, এত অপমান আশা করিনি।”

নতুন পথচলার পরিকল্পনা:
রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে হিরো আলম জানিয়ে দেন, তিনি এখন পুরোপুরি মিডিয়া ও কনটেন্ট নির্মাণে মনোযোগ দেবেন। “মিডিয়াতে অনেক কাজ করার সুযোগ আছে,” বলেন তিনি, “সেই সুযোগ কাজে লাগাতে চাই। আমি এখন মিডিয়াকেই আমার মূল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখতে চাই।”

স্বপ্ন, সংগ্রাম ও সেলুন উদ্বোধন:
উল্লেখ্য, হিরো আলম যখন এই ঘোষণা দেন, তিনি তখন স্থানীয় একটি সেলুনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। স্বপন জেন্টস পার্লারের উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি বলেন, “স্বপ্ন দেখলে সফলতা আসবেই। যারা আমাকে ছোট করেছে, তাদের বলি—ছোট মানুষ বলে কিছু নেই। যার স্বপ্ন বড়, সাফল্য একদিন আসবেই। আমি স্বপন ভাইয়ের ব্যবসার সাফল্য কামনা করি এবং এই এলাকার সবাই যেন তার সেলুনে এসে সেবা গ্রহণ করেন, সেটাও প্রত্যাশা করি।”


 

একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে পরিচিত হলেও হিরো আলম নিজেকে একজন সংগ্রামী রাজনীতিক হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রাজনীতির রূঢ় বাস্তবতা, অপমান আর বিচারহীনতার অভিজ্ঞতায় ক্লান্ত হয়ে অবশেষে তিনি রাজনীতি থেকে বিদায় নিলেন। এই সিদ্ধান্তে যেমন একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি হলো, তেমনি শুরু হতে যাচ্ছে তার নতুন পথচলা—একটি পরিচ্ছন্ন, সুস্থ মিডিয়া ক্যারিয়ারের।

No comments found