ঝালকাঠি: ঝালকাঠির রাজাপুরে বিএনপির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত 'রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা কর্মসূচি'র লিফলেট বিতরণ শেষে ফেরার পথে দলের এক মনোনয়ন প্রত্যাশী, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা গোলাম আজম সৈকতের গাড়িবহরে হামলার অভিযোগ উঠেছে অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামালের অনুসারীদের বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে, রফিকুল ইসলাম জামালের অনুসারীদের গাড়ী আটকে গালি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সৈকতের ভাই ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপিতে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সৈকতের গাড়িবহরে হামলার অভিযোগ:
গোলাম আজম সৈকত অভিযোগ করে জানান, শনিবার (১১ অক্টোবর) দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে উপজেলার গালুয়া ইউনিয়নের পুটিয়াখালী মিরের হাট সংলগ্ন সোনালী মোড় এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উপজেলা শুক্তাগড় ইউনিয়নে কর্মসূচি শেষে তিনি নেতা-কর্মীদের নিয়ে গাড়িবহরে নিজ বাড়ির দিকে ফিরছিলেন। একই পথে সে সময় কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামালের গাড়িবহরও যাচ্ছিল। সৈকতের অভিযোগ, জামালের অনুসারীরা তাদের গাড়িবহর অতিক্রম করার সময় অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা বহরের সর্বশেষ একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস আটকে ড্রাইভারের ওপর চড়াও হয় এবং গাড়ি ভাঙচুর করে।
তিনি দাবি করেন, এই হামলায় শ্রমিক দল নেতা সোহেল, বিএনপি নেতা ইউনুস মেম্বার, ইলিয়াস মোল্লা, রিপন বিশ্বাসসহ অন্তত ১০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
জামালের অনুসারীদের গাড়ি আটকে গালিগালাজের পাল্টা অভিযোগ:
এদিকে, বিএনপির নির্বাহী কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল এর অনুসারীদের গাড়ী বহরের পিছনে থাকা একটি নোহা গাড়ি আটকে গাড়িতে থাকা নেতা-কর্মীদের গালি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গোলাম আজম সৈকত এর ভাই ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে।
রবিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে রফিকুল ইসলাম বলেন, কাঠালিয়ায় প্রোগ্রাম শেষে রাজাপুরে ফেরার পথে তারা একত্রে সাতটি গাড়ি নিয়ে রওনা দেন। তাদের বহরের শেষে একটি নোহা গাড়ি ছিল। তিনি যখন পুটিয়াখালী অতিক্রম করে তার বাড়ি বড়ইয়ার দিকে রওনা হন, তখন ফোনে জানতে পারেন যে তাদের একটি গাড়ী আটকে দিয়ে অপর প্রার্থী বহিষ্কৃত সাবেক ছাত্রনেতা গোলাম আজম সৈকত এর ভাই ও তার সমর্থকরা নেতা-কর্মীদের গালাগালি করেছে। ওই গাড়িতে রাজাপুর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাসুম বিল্লাহ পারভেজ, সদস্য সচিব নাজমুলসহ আরও অনেকে ছিলেন বলে তিনি জানান।
রফিকুল ইসলাম আরও দাবি করেন, পরবর্তীতে গোলাম আজম সৈকত তাদের লোকজনের কাছে ভুল স্বীকার করে ক্ষমাও চেয়েছেন। তবে এর কিছু সময় পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে জানতে পারেন যে সৈকত দেশীয় লাঠিসোটা নিয়ে লোকজন জড়ো করে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন কথা বলছেন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নাটক সাজিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তিনি সৈকতের এই মিথ্যাচারের তীব্র প্রতিবাদ জানান।
পুলিশের বক্তব্য:
রাজাপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আব্দুল মালেক জানান, খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকেই থানায় লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।