দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই মিসর সীমান্তবর্তী রাফা ক্রসিং খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্তটিকে আন্তর্জাতিক মহল 'মানবিক করিডোর' হিসেবে দেখলেও, বিশ্লেষকরা এর পেছনে গাজা উপত্যকাকে ফিলিস্তিনি জনশূন্য করার সুদূরপ্রসারী কৌশল দেখছেন। ২০২৩ সালের শেষদিকে হামাস-ইসরায়েল সংঘাত তীব্র হওয়ার পর ইসরায়েলি সেনারা এই ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল, যা গাজার মানুষের জীবনরেখা হিসেবে পরিচিত ছিল।
ঐতিহাসিকভাবে রাফা ক্রসিং গাজার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য প্রবেশ এবং চিকিৎসার জন্য মিসরে যাওয়ার একমাত্র পথ। কিন্তু ক্রসিংটি খোলার ক্ষেত্রে ইসরায়েল স্পষ্ট করেছে যে, ফিলিস্তিনিরা এর মাধ্যমে মিসরে প্রবেশ করতে পারলেও, তাদের গাজায় ফিরে আসার সুযোগ থাকবে না। এটি উপত্যকাটির জনসংখ্যার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর), ইসরায়েলের সামরিক বেসামরিক সমন্বয়কারী সংস্থা সিওজিএটি (COGAT) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিশ্চিত করেছে, মিসরের সঙ্গে সমন্বয় এবং ইসরায়েলি অনুমোদনের পরই গাজার নাগরিকরা এই ক্রসিং ব্যবহার করতে পারবেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিশন পুরো প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করবে। এই ঘোষণার পর উন্নত চিকিৎসা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনে মিসর যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা গাজাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, গত অক্টোবরে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও, ইসরায়েল রাফা ক্রসিং দিয়ে জরুরি ত্রাণ ঢুকতে দেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এখন কেবল বের হওয়ার সুযোগ দেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে—ইসরায়েল কি দীর্ঘ দুই বছরের আগ্রাসনের পর গাজাকে বসবাসের সম্পূর্ণ অনুপযোগী করে জনবিচ্ছিন্ন করতে চাইছে? যুদ্ধ, অবরোধ এবং অবকাঠামো ধ্বংসের কারণে গাজা উপত্যকার চিকিৎসা, কর্মসংস্থান এবং সামগ্রিক জনজীবন কাঠামো ইতোমধ্যেই ভেঙে পড়েছে।



















