রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে ছাত্রশিবিরের হামলা নিয়ে ব্যাপক নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বইছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সাবেক সমন্বয়ক ও বর্তমান আহ্বায়ক আব্দুল কাদের এক বিবৃতিতে বলেছেন, এটি ‘ফ্যাসিবাদী কালচার পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা’ ছাড়া কিছুই নয়।
তিনি বলেন, “রাবিতে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে ছাত্রশিবিরের বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই। কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের প্রতিবাদ জানানোর ও কর্মসূচি পালনের অধিকার এই দেশের সংবিধান স্বীকৃত করেছে। এই সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন করার অর্থ গণতন্ত্রকে উপহাস করা, ভিন্নমতকে দমন করার চক্রান্ত করা।”
বুধবার (২৮ মে) রাতে ফেসবুকে প্রকাশিত এক স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “বিগত দিনে ফ্যাসিবাদের দোসর ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে ভিন্নমতের ওপর জুলুম চালাত, তাদের দমন করত এবং স্পেস দিত না। আমরা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ছাত্রলীগকে হটাতে পেরেছি, কিন্তু আজ যখন ছাত্রশিবির একই কায়দায় আক্রমণ করে, তখন প্রশ্ন জাগে—তারা কি আবার সেই অন্ধকার ইতিহাস ফিরিয়ে আনছে?”
আব্দুল কাদের স্পষ্টভাবে সতর্ক করে দিয়েছেন—
“ছাত্রসংগঠনগুলো যেন আগের কালচারে না ফিরে যায়। যারা একসময় নিপীড়িত ছিল, তারা যেন আজ আবার নিপীড়ক না হয়ে ওঠে। যারা আগে ফ্যাসিবাদের শিকার হয়েছে, তারা যেন নতুন ফ্যাসিবাদ তৈরি না করে। শিক্ষাঙ্গনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ রক্ষাই এখন সবচেয়ে জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষাঙ্গনে সহনশীলতা, মতের ভিন্নতা এবং যুক্তিনির্ভর রাজনীতি চর্চা না হলে শিক্ষার্থীরা সংকটে পড়বে। তাদের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হবে। শুধু ছাত্ররাজনীতি নয়, পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাই হবে এর বলি।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বক্তব্য কেবল একজন ছাত্রনেতার প্রতিবাদ নয়, এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি সতর্কবার্তা। শিক্ষাঙ্গনের রাজনীতিতে যদি পুরোনো দমন-পীড়নের দিন ফিরে আসে, তবে তা আবারও একটি অস্থিতিশীল এবং সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে।
আব্দুল কাদেরের বক্তব্য শুধু তৎকালীন ঘটনার প্রতিবাদ নয়, বরং এটি বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতিতে ফেরত আসা সহিংসতা ও অসহিষ্ণুতা বিরোধী এক স্পষ্ট আহ্বান। আজ যখন ছাত্ররাজনীতি আবার দখল, দমন ও প্রতিপক্ষ নির্মূলের পথে হাঁটছে, তখন এমন প্রতিবাদ সময়োপযোগী ও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।