বগুড়ার পুলিশ লাইনে গোপন বন্দিশালার সন্ধান মিলেছে! গুম তদন্ত কমিশনের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সেখানে বছরের পর বছর ধরে মানুষকে আটকে রেখে নির্যাতন চালানো হয়েছে। গোপন এই কারাগার থেকে কেউ কেউ আর জীবিত ফেরেননি! কীভাবে চলতো এই নিষ্ঠুর অত্যাচার? কারা ছিলেন এর পেছনে? জানুন বিস্ময়কর ও ভয়াবহ সব তথ্য!
বাংলাদেশের ইতিহাসে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে! গুম তদন্ত কমিশনের সদস্য নূর খান জানিয়েছেন, বগুড়ার পুলিশ লাইনের ভেতরে একটি গোপন বন্দিশালার সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে মানুষকে অবৈধভাবে আটকে রেখে নির্মম নির্যাতন চালানো হতো। ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই বন্দিশালার অস্তিত্ব এতদিন ছিল সাধারণ মানুষের অজানা!
১০-১২ বছর ধরে চলছিল গোপন নির্যাতন! তদন্ত কমিশন জানিয়েছে, এই বন্দিশালা গত ১০-১২ বছরের মধ্যে তৈরি করা হয়েছে। এখানে বিভিন্ন জেলা থেকে বন্দিদের আনা হতো, যারা কখনোই আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি। অনেকের মৃত্যু ঘটেছে এখানেই।
নির্যাতনের চিৎকার বাইরের কেউ শুনতে পেত না।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের নামে চলত নির্মম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।
কিছু বন্দি রহস্যজনকভাবে "নিখোঁজ" হয়ে যেত।
গত ১৫ বছরে কতজন এখানে বন্দি হয়েছেন, তার হিসাবও অজানা।
‘আয়নাঘর’ কেলেঙ্কারি এবং গুমের ইতিহাস প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশি-বিদেশি সাংবাদিক ও ভুক্তভোগীদের নিয়ে ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করেন। সেখানে উঠে আসে ভয়াবহ সব নির্যাতনের গল্প। সুইডেনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজ প্রথমবারের মতো এই গোপন বন্দিশালাগুলোর বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যা 'আয়নাঘর' নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর গুম হওয়া অনেক ব্যক্তি এসব বন্দিশালা থেকে ফিরে এসে তাঁদের দুঃসহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।
এই গোপন বন্দিশালার পেছনে কারা? তদন্ত কমিশন বলছে, এই বন্দিশালার অস্তিত্ব প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অংশ গোপন অপারেশনের মাধ্যমে ভিন্নমত দমন করেছে। তবে এই কর্মকাণ্ডের নির্দেশদাতা কারা, সে বিষয়ে কমিশন এখনো বিস্তারিত জানায়নি।
কী হবে পরবর্তী পদক্ষেপ? গুম তদন্ত কমিশন বলেছে, তারা এই বন্দিশালার বিষয়ে আরও গভীর তদন্ত চালাবে এবং দায়ীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে। এদিকে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এই ঘটনার বিচার দাবি করছে।
শেষ কথা: বগুড়ার গোপন বন্দিশালার সন্ধান মিলে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছে। দেশে এ ধরনের বন্দিশালা আরও আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা জরুরি।
বাংলাদেশ কি এই কালো অধ্যায় থেকে মুক্তি পাবে? নাকি এই গোপন বন্দিশালার চক্র আবারও সক্রিয় হবে? উত্তর সময়ই দেবে!