close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

পশ্চিমা দেশ জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রিটেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে ইরান..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে উত্তেজনা চূড়ায় পৌঁছালেও এবার কূটনৈতিক সমাধানের পথে হাঁটছে ইউরোপ। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসছে ইউরোপের তিন শক্তিধর দেশ। তবে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—যুক্তরাষ্ট্র কি পাশে থা..

মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধাবস্থার ঘনঘটার মধ্যেই এবার এক নতুন কূটনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে। ইউরোপের তিন প্রভাবশালী দেশ—জার্মানি, ফ্রান্স এবং ব্রিটেন—ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসতে চলেছে। এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে জেনেভায়, আগামী শুক্রবার, যেখানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং অঞ্চলজুড়ে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা।

জার্মান এক কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, আলোচনার আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান কূটনীতিক কাজা কাল্লাসের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করবেন ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। এর পরেই তারা সম্মিলিতভাবে ইরানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করবেন।

এই বৈঠক এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যখন ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযান এবং ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে পুরো মধ্যপ্রাচ্য অস্থির হয়ে উঠেছে। কয়েক দশকের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো সংঘর্ষ সরাসরি যুদ্ধের সম্ভাবনা ডেকে এনেছে। একদিকে যেমন ইসরায়েল হুঁশিয়ারি দিয়েছে—ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত তারা থামবে না, অন্যদিকে ইরানও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ এবং আত্মরক্ষার অংশ মাত্র।

এই আলোচনার মধ্যে একটি বড় অনুপস্থিতি হলো যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউজ এখনো পরিষ্কারভাবে জানায়নি, তারা এই আলোচনার সঙ্গে যুক্ত থাকবে কিনা। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীরবতা পরিস্থিতিকে আরও ধোঁয়াশাপূর্ণ করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র যদি স্পষ্ট অবস্থান না নেয়, তাহলে ইউরোপের এই কূটনৈতিক প্রয়াসও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠতে পারে।

তবে জার্মান সূত্র বলছে, যুক্তরাষ্ট্র একটি সমন্বয়কারী ভূমিকা পালন করতে পারে। তাদের মতে, আলোচনার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ইরানকে এই বার্তা দেওয়া—বিশ্ব সম্প্রদায় শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যা সমাধানে আগ্রহী, এবং পারমাণবিক কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের গণ্ডির মধ্যে রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পরে, বিভিন্ন দেশের পারমাণবিক নীতিবিষয়ক বিশেষজ্ঞরাও একটি পৃথক ফোরামে বসবেন বলে জানা গেছে। সেখানে বিস্তারিত কারিগরি ও কৌশলগত আলোচনা হবে, যাতে ভবিষ্যতে এই উত্তেজনা দীর্ঘমেয়াদী শান্তি চুক্তির মাধ্যমে নিরসন করা সম্ভব হয়।

ইসরায়েল বরাবরই বলে আসছে—ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি, এবং তাদের লক্ষ্য তা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা। অপরদিকে, ইরান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে—তাদের পারমাণবিক গবেষণা শুধুমাত্র শক্তি উৎপাদন এবং বৈজ্ঞানিক উন্নয়নের জন্য, সামরিক প্রয়োগ নয়।

এই বৈঠক সফল হলে হয়তো বহু বছরের রাজনৈতিক উত্তেজনা সাময়িক প্রশমিত হতে পারে। কিন্তু ব্যর্থতা মানেই—আরেকটি ভয়ঙ্কর যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়ানো বিশ্বের জন্য অশনি সংকেত। বিশ্ব এখন তাকিয়ে আছে জেনেভার দিকে, যেখানে হয়তো নির্ধারিত হবে—এই অঞ্চল শান্তির দিকে যাবে, নাকি ধ্বংসের?

Hiçbir yorum bulunamadı