close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

প্রতিশ্রুতি রাখার চ্যালেঞ্জ: বুড়িগঙ্গা ও বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবর্তনের পথে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সম্প্রতি একটি নাগরিক সংলাপে অংশ নিয়ে দেশের পরিবেশ উন্নয়নের জন্য তার চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সম্প্রতি একটি নাগরিক সংলাপে অংশ নিয়ে দেশের পরিবেশ উন্নয়নের জন্য তার চ্যালেঞ্জগুলো এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন। ঢাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বুড়িগঙ্গা নদীর দূষণমুক্তকরণ, এবং বায়ুদূষণ মোকাবেলায় অনেক সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেন তিনি। অপ্রাপ্তি বা প্রতিশ্রুতি? সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস সেন্টার ও ব্লাস্টের আয়োজিত নাগরিক সংলাপে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, যখনই মানুষ তাকে দেখে, তারা বলে, “আপনি তো বলেছিলেন, এটা করবেন, ওটা করবেন। কিন্তু এখন তো কিছুই দেখছি না।” তিনি বলেন, “আমার যদি সাধ্য থাকে, তবে অবশ্যই কাজ করব, কিন্তু এককভাবে সব কিছু করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।” রিজওয়ানা হাসান উল্লেখ করেন যে, পরিবেশের বিভিন্ন বিষয় এককভাবে তার দায়িত্বে নেই, বরং এই কাজের জন্য অনেকগুলো কর্তৃপক্ষ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, “৫৩ বছরের পুরনো সমস্যার সমাধান ৬ মাসে চাওয়া অনেক বেশিই।” তিনি উল্লেখ করেন, “এটা রাতারাতি পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।” বুড়িগঙ্গা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা: অসম্ভবকে সম্ভব করার চেষ্টা উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, “বুড়িগঙ্গা নদীকে দূষণমুক্ত করা অসম্ভবকে সম্ভব করার মতো একটি কাজ। এই কাজ চলছে এবং রিসোর্স পাওয়া সাপেক্ষে এটি আরও দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।” তিনি আশাবাদী যে, সমাজ সংস্কার এবং নদী সংস্কারের ক্ষেত্রে সময় প্রয়োজন, তবে যথাযথ পদক্ষেপ নিলে তা সম্ভব। বাংলাদেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “আমরা অবশ্যই পরিবর্তন আনতে পারব, কারণ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একজন তরুণকে, যিনি দ্রুত এই পরিবর্তন নিয়ে কাজ করবেন।” বায়ুদূষণ এবং ভবিষ্যতের সরকার: বায়ুদূষণ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের সামনে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমরা আগের সরকারের ভয়ংকর লিগ্যাসি বহন করছি।” তবে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, নির্বাচিত সরকারের অধীনে বায়ুদূষণ সমাধানের জন্য আরও কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে। এছাড়া, তিনি উল্লেখ করেন, “ঢাকার বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা শুনে আসছি ৩৬ বছর বয়স থেকে, কিন্তু এখন আমি ৫৪ বছর বয়সে এসেও এখনও সেই প্রতিশ্রুতি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি।” তার এই মন্তব্যে, একদিকে সরকার এবং প্রশাসনের সীমাবদ্ধতা তুলে ধরেছেন, অন্যদিকে জনগণের মধ্যে সরকারি প্রতিশ্রুতির প্রতি অসন্তোষের ইঙ্গিত দিয়েছেন। একটি ধাপে ধাপে পরিবর্তনের প্রচেষ্টা উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, “বাংলাদেশে পরিবেশগত পরিবর্তন একটি ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া। চেরাগে ঘষা দিয়ে দেশ বদলে ফেলা যাবে না।” তিনি পরিবেশ উন্নয়ন এবং সংস্কারের ক্ষেত্রে সময়, অর্থ, এবং পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, “সামনের নির্বাচিত সরকার যদি পরিবেশের উন্নয়নে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তবে দেশের পরিবেশ পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে।” শেষ কথা পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, যে পরিবেশ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রচেষ্টা, যেখানে সরকারের সব স্তরের সমন্বয়, পরিকল্পনা এবং রিসোর্সের প্রয়োজন। তিনি তার বক্তব্যে সকলকে পরিবেশ রক্ষা এবং সরকারের প্রতি আরও সহানুভূতি ও সমর্থন দেখানোর আহ্বান জানান। এখন, দেখতে হবে আগামী নির্বাচিত সরকারের অধীনে এসব প্রতিশ্রুতি কতটুকু বাস্তবায়িত হতে পারে।
Keine Kommentare gefunden