ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি বিতর্কিত দাবি কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। গত জুনে মার্কিন হামলায় ইসলামী প্রজাতন্ত্রের পরমাণু কেন্দ্রগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে—ট্রাম্পের এমন দাবিকে সোমবার খামেনি ‘স্বপ্ন দেখতে’ বলেছেন।
খামেনি তার অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের পরমাণু স্থাপনা ধ্বংসের মন্তব্যকে ‘অনুপযুক্ত, ভুল ও মোড়ল সুলভ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি ট্রাম্পের এই অধিকার নিয়েও প্রশ্ন তোলেন, "যদি কোনো দেশের পারমাণবিক শিল্প থাকে, তবে তারা কী রাখতে পারবে বা পারবে না, তা বলার অধিকার মার্কিন প্রেসিডেন্টের আছে কি না।
গত জুনের মাঝামাঝি সময়ে ইসরায়েল ইরানের ওপর এক নজিরবিহীন বোমা হামলা শুরু করে। অল্প সময়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রও এই হামলায় যোগ দেয় এবং ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানে।
গত সপ্তাহে ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে এক ভাষণের সময় ট্রাম্প আবারও বলেন, এই হামলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ‘সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন’ করে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তিনি দাবি করেন, “আমরা ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ১৪টি বোমা ফেলেছিলাম। আমি যেমনটা বলেছিলাম, সেগুলো সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে এবং এটি নিশ্চিত করা হয়েছে।”
ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প এই হামলাগুলোকে ‘সবচেয়ে সুন্দর সামরিক অভিযান’ বলেও উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, মার্কিন হামলায় ইরানের ‘পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস হওয়ার’ পর দেশটি ‘মধ্যপ্রাচ্যের আর মোড়ল হয়ে থাকেনি’।
মার্কিন হামলার প্রকৃত প্রভাব এখনো অজানা। পেন্টাগন জানিয়েছে, এই হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে এক থেকে দুই বছর পিছিয়ে দিয়েছে। তবে প্রাথমিক মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এর বিপরীত তথ্য দেওয়া হয়েছিল, যেখানে বলা হয় যে এই বিলম্ব মাত্র কয়েক মাসের।
ইসরায়েলের সঙ্গে জুনের এই যুদ্ধটি তেহরান এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে পূর্বনির্ধারিত ষষ্ঠ দফা পারমাণবিক আলোচনার দুই দিন আগে ঘটেছিল, যা এপ্রিল মাসে শুরু হয়েছিল। সেই থেকে পারমাণবিক আলোচনাগুলো ব্যাহত হয়েছে। ইরান জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সামরিক হামলা না করার নিশ্চয়তা দিলেই কেবল তারা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। খামেনির কঠোর প্রতিক্রিয়া ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ট্রাম্পের এই বাগাড়ম্বরপূর্ণ মন্তব্যগুলো ইরানকে আলোচনার টেবিলে ফেরানোর পথে আরও বাধা সৃষ্টি করবে।