close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

পরীক্ষা দিতে এসে প্রসব বেদনা, সন্তান জন্মের পর  মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে হাজেরা..

Akm Kaysarul Alam avatar   
Akm Kaysarul Alam
এ কে এম কায়সারুল আলম
লিখিত পরীক্ষাগুলো শেষ করেছেন স্নাতকোত্তরের (মাস্টার্স) শিক্ষার্থী অন্তঃসত্ত্বা হাজেরা খাতুন (২৭)। গত বুধবার(১৪ মে) ছিল মৌখিক পরীক্ষা। হাজেরা কুড়িগ্রামের উলিপুর থেকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় পরীক্ষা দিতে আসেন স্বামীর সঙ্গে মৌখিক পরীক্ষা শুরুর আগেই শুরু হয় তার প্রসববেদনা।
 
পরে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে হাজেরাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি করান স্বামী। সেখানে স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে হাজেরা এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেন।  এরপর মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে দুপুর সাড়ে ১২টা আবার কলেজে উপস্থিত হয় অদম্য হাজেরা। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ মাইক্রোবাসের ভেতরেই হাজেরার মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করেন। সুস্থ হয়ে বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বাড়ি ফিরে যায় প্রসূতি মা।
 
এ ঘটনায় সামাজিক  যোগাযোগ মাধ্যমে প্রসংসায় ভাসছেন অদম্য হাজেরা। হাজেরার মনোবল অন্য শিক্ষার্থীদের জন্য অনুকরণীয় বলে ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন অনেকে।
 
হাজেরা খাতুন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার চরবজরা গ্রামের মো. আবদুর রশিদের স্ত্রী। তার বাবার বাড়ি যশোরে। ৫ বছর আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। হাজেরার ৪ বছরের এক কন্যা সন্তান আছে। স্বামী আবদুর রশিদ একজন পল্লী প্রাণী চিকিৎসক। হাজেরা হাতীবান্ধা সরকারি আলিমুদ্দিন কলেজের মাস্টার্স পরীক্ষার্থী।
 
স্বামী আবদুর রশিদ জানান, পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের আগেই স্ত্রীর প্রসববেদনা শুরু হয়। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে স্ত্রীর নিরাপদ প্রসবের জন্য হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাদের সহায়তায় স্ত্রীকে হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি করালে নরমাল ডেলিভারিতে স্ত্রী একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেয়। আমার স্ত্রী ও নবজাতক সন্তান এখন সুস্থ আছে।
 
এসময় হাজেরা খাতুন জানান, মাস্টার্স পাসের পর নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই, পরিবারকে সহায়তা করতে চাই। সন্তানদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করতে চাই। 
 
পরীক্ষা কেন্দ্রের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও  বিভাগীয় প্রধান মোজাম্মেল জানান, ‘বিষয়টি শুনে  তাৎক্ষণিক ওই পরীক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়। সন্তান প্রসবের পর নবজাতক শিশু ও হাজেরা খাতুনের জন্য  উপহারসামগ্রী দেওয়া হয়েছে। আমরা খুব খুশি যে নবজাতক ও মা সুস্থ আছে।
 
জানা গেছে, সুস্থ হয়ে বুধবার সন্ধ্যায় হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স  থেকে নবজাতক সন্তানসহ স্বামী আবদুর রশিদ স্ত্রী হাজেরা খাতুনকে নিয়ে  গ্রামের বাড়ি উলিপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। পরে রাত ৯টায় তারা নিজ বাড়িতে পৌঁছেন। 
 
হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনারুল হক বলেন, নরমাল ডেলিভারি হয়েছে। তিনি ছেলে সন্তান প্রসব করেন। নবজাতক ও প্রসূতি মা দু'জনেই সুস্থ আছেন। বুধবার সন্ধ্যায় তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
 
 
نظری یافت نشد