ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেছেন, জনগণ সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে (পিআর) নির্বাচন মানে না। তিনি এ পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচন প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগও তোলেন।
বাংলাদেশ এখনো সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে (পিআর) নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুত নয় এবং এ ধরনের নির্বাচন জনগণ কোনোভাবেই মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু।
রোববার (২৭ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভাটি আয়োজন করে ভাসানী জনশক্তি পার্টি, যার শিরোনাম ছিল— ‘উত্তাল জুলাইয়ে ফ্যাসিবাদ পতন আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুসহ রাজনীতিবিদ, ছাত্র-জনতার অবদান এবং আগামীর বাংলাদেশ’।
সভায় বাবলু আরও বলেন, "মহান মুক্তিযুদ্ধ বেহাত হয়েছে, ৯০-এর গণঅভ্যুত্থান বেহাত হয়েছে, এখন ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানও বেহাত হবার পথে। আজ একটি পক্ষ ভারতের মাটিতে বসে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে, আরেক পক্ষ বাংলাদেশে বসে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজনের ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি অভিযোগ করেন, ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তি এখনো সক্রিয় এবং তারা নির্বাচন বিলম্বিত করে জাতির উপর এক অদৃশ্য শাসন কায়েম করতে চাইছে। "জনগণ পিআর পদ্ধতিকে সমর্থন করে না এবং তারা এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন ভাসানী জনশক্তি পার্টির মুখপাত্র মো. আব্দুল কাদের। তিনি বলেন, “যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ প্রাণ দিয়েছিল গণঅভ্যুত্থানে, তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। আমরা চেয়েছিলাম এক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, যেখানে থাকবে বাকস্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, শক্তিশালী অর্থনীতি এবং জনগণের নিরাপত্তা। কিন্তু আজ আমরা দেখছি, সেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিতর্কিত করা হচ্ছে, প্রতিদিনই দেশজুড়ে চলছে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, হত্যা।”
তিনি আরও বলেন, “জাতীয় নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে, দেশের ক্ষতিই বাড়বে। আমরা চাই দ্রুত নির্বাচন হোক এবং জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠা পাক।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাসানী জনশক্তি পার্টির মহাসচিব আবু ইউসুফ সেলিম, জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, বাসদের বজলুর রশীদ ফিরোজ, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, গণসংহতি আন্দোলনের মনির উদ্দিন পাপ্পু এবং ভাসানী জনশক্তি পার্টির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সভায় বক্তারা সকলেই একমত পোষণ করেন যে, নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিকর পদ্ধতি নয়, বরং স্বচ্ছ, জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণমূলক একটি নিরপেক্ষ ভোটই হতে হবে বর্তমান রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের পথ।