ভারতের মিডিয়ায় ‘শাহীন’ নাটক: পাকিস্তান বলছে সম্পূর্ণ ভুয়া!
বিশ্ব রাজনীতিতে ভারত ও পাকিস্তান বরাবরই উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু। সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যেই, ভারতীয় গণমাধ্যম দাবি করেছে, পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস’-এর সময় শাহীন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। তবে এই দাবিকে ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান সরকার।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার এক কঠোর বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের সামরিক বাহিনী উক্ত অভিযানে কোনো ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেনি। বরং, এই ধরনের মিথ্যা প্রচারণা ভারতীয় সেনাবাহিনীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই শুরু হয়েছে।
ভুয়া ভিডিও, ছড়ানো হলো ভুল তথ্য
পাকিস্তান দাবি করেছে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর অফিসিয়াল এক্স (পূর্বের টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়, যেখানে দেখানো হয় শাহীন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের দৃশ্য। এই ভিডিওটি ভুয়া ও মনগড়া বলে প্রমাণ পাওয়ার পর সেটি সরিয়ে ফেলা হলেও, ভারতের একাধিক গণমাধ্যম যাচাই না করেই তা সম্প্রচার করে দেয়।
পাকিস্তান বলছে, এর মাধ্যমে ভারত আসলে নিজের সামরিক ব্যর্থতা ঢাকতে চাইছে এবং জনগণের দৃষ্টি ভিন্নদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করছে।
উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচার? পাকিস্তানের প্রশ্ন
পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, এই ধরনের অপপ্রচার মূলত ভারত সরকারের একটি "কৌশলগত বিভ্রান্তি"—যার উদ্দেশ্য হলো ভারতের সাম্প্রতিক ব্যর্থতা ও দুর্বলতা থেকে দৃষ্টি সরানো।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন,
“ভিডিওটি মুছে ফেলা হলেও, ভারতীয় সেনাবাহিনী এখনো এ বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি। এটা দায়িত্বহীন এবং আন্তর্জাতিক দৃষ্টিতে সন্দেহজনক।”
পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল এবং যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ
এছাড়াও পাকিস্তানের দাবি, ভারত সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে ‘পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল’ এবং ‘যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন’-এর মতো গুরুতর অভিযোগ তুলছে। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মহলের চোখে পাকিস্তানকে হুমকি হিসেবে উপস্থাপন করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
তবে পাকিস্তান তাদের অবস্থানে অটল, এবং বিশ্বকে অনুরোধ করেছে যেন যাচাই ছাড়া ভারতীয় মিডিয়ার এই ধরনের প্রোপাগান্ডায় বিশ্বাস না করে।
মিডিয়া দায়িত্ব নেবে কবে?
বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনার সময় এই ধরনের ভুয়া প্রচার শুধুমাত্র পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। গণমাধ্যমের ভূমিকা হওয়া উচিত সত্য উদঘাটন, মিথ্যা নয়।
বিশ্বজুড়ে যখন সংবাদপত্র ও মিডিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে, তখন ভারতীয় মিডিয়ার এমন আচরণ শুধু আঞ্চলিক শান্তির জন্য নয়, বরং বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্যও হুমকি তৈরি করছে।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনার এই নতুন অধ্যায় আবারও প্রমাণ করে, তথ্যের সত্যতা যাচাই ছাড়া গণমাধ্যমের প্রচার কতটা বিপজ্জনক হতে পারে। পাকিস্তান বলছে, সত্যের ওপর ভিত্তি করেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে তারা অবস্থান নেবে।