close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

পাকিস্তানের ফতেহ ক্ষেপণা স্ত্র কেন এত ভ য়ং কর?

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
দিল্লিকে লক্ষ্য করে পাকিস্তানের ছোড়া হাইপারসনিক ফতেহ-২ মিসাইল মাঝ আকাশে ধ্বংস করল ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। কিন্তু কেন এই মিসাইল এত ভয়ংকর, আর কীভাবে তা রুখে দিল ভারত—জেনে নিন বিস্ময়কর সব তথ্য।..

দিল্লির আকাশে বিপদ ঘনিয়ে এসেছিল। পাকিস্তানের ভয়ংকর ফতেহ-২ ব্যালেস্টিক মিসাইল ভারতের রাজধানী লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয়েছিল। কিন্তু ভারতের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তা মাঝ আকাশেই ধ্বংস করে দেয়। ঘটনাটি শুধু এক মিসাইল প্রতিহত করার ঘটনা নয়—বরং তা দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের যুদ্ধপ্রস্তুতির সাম্প্রতিকতম ও ভয়াবহ দিকটিকে সামনে এনে দিয়েছে।

গত ১০ মে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, পাকিস্তান তাদের ফতেহ-২ ব্যালেস্টিক মিসাইল দিয়ে ভারতের স্ট্র্যাটেজিক এলাকা, বিশেষ করে রাজধানী দিল্লিকে টার্গেট করেছিল। মিসাইলটি ছোঁড়া হয় এমন এক সময়ে, যখন দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতীয় পক্ষের দাবি, হরিয়ানার সিরসা জেলার আকাশেই পাকিস্তানের এই ক্ষেপণাস্ত্রকে প্রতিহত করে ভারতীয় বারাক-৮ লং রেঞ্জ সারফেস টু এয়ার মিসাইল (LR-SAM) সিস্টেম।

ফতেহ-২: ভয়ংকর অস্ত্র, কিন্তু কেন?

ফতেহ-২ পাকিস্তানের তৈরি দূরপাল্লার ভূমি থেকে ভূমি নিক্ষেপযোগ্য ব্যালেস্টিক মিসাইল। এটি ফতেহ-১ সিরিজের উন্নত সংস্করণ। ফতেহ-২-এর পাল্লা ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত, যা আগের সংস্করণের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর ও বিপজ্জনক। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম এবং হাইপারসোনিক প্রযুক্তির কারণে শত্রুপক্ষের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এড়িয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুকে বিধ্বস্ত করতে সক্ষম।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই মিসাইল ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ বা নির্ভুল হামলার জন্য ডিজাইন করা। শত্রু সেনাঘাঁটি, কমিউনিকেশন হাব, এয়ার ডিফেন্স রাডার বা কৌশলগত স্থাপনাগুলোকে একদম কেন্দ্রস্থলে আঘাত করার ক্ষমতা রাখে। এতে রয়েছে ‘ফ্ল্যাট ট্র্যাজেক্টরি’ প্রযুক্তি, যার ফলে মিসাইলটি টার্গেটের দিকে একেবারে সরলরেখায় যায়, বক্র পথে নয়—ফলে ধ্বংস করা কঠিন হয়ে পড়ে।

ভারতের দাবি: সফল প্রতিরক্ষা, মাটিতে মিশে গেল পাকিস্তানের পরিকল্পনা

ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পাকিস্তানের ফতেহ-২ মিসাইলকে সঠিক সময়ে শনাক্ত করে LR-SAM সিস্টেম দিয়ে আঘাত হানা হয়। ফলে মিসাইলটি মাঝ আকাশেই বিস্ফোরিত হয় এবং ভারতের ভেতরে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

‘আমাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই হামলাকে ঠেকিয়ে দিয়েছে,’ এমনটাই জানানো হয় ভারতীয় প্রতিরক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে। হরিয়ানার সিরসা এলাকায় ফতেহ-২ মিসাইলের ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকতে দেখা যায় বলে জানায় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।

পাকিস্তানের বক্তব্য ও সন্দেহ

পাকিস্তান দাবি করছে, ফতেহ-২ সম্পূর্ণভাবে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি একটি গাইডেড আর্টিলারি রকেট, যা ২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়। এটি তাদের ফতেহ সিরিজের আপগ্রেড ভার্সন। পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী, এই মিসাইল কোনো বিদেশি সহযোগিতা ছাড়া তৈরি হলেও কিছু গোপন সূত্র বলছে, এর পেছনে চিনের প্রযুক্তিগত সহায়তা রয়েছে।

শেষ কথা: এটাই কি ভবিষ্যতের যুদ্ধের ইঙ্গিত?

দুই দেশের মধ্যে এমন ক্ষেপণাস্ত্র বিনিময় কিংবা এর প্রতিরোধ যুদ্ধের সরাসরি সূচনা না হলেও এটা স্পষ্ট যে, ভারত ও পাকিস্তান এখন এমন এক প্রতিযোগিতায় জড়িয়ে পড়েছে, যেখানে প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা ও ধ্বংস ক্ষমতা—সবকিছুর পরীক্ষাই এখন শুরু হয়ে গেছে।

ফতেহ-২ মিসাইলের ব্যর্থতা পাকিস্তানের জন্য একটি বড় ধাক্কা হলেও, এই প্রযুক্তির ভয়াবহতা যে আগামীতে আরও ঘনীভূত উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Geen reacties gevonden