close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

পাকিস্তানের এক সিদ্ধান্তে বিশাল ক্ষ তির মুখে ভারতীয় বিমানসংস্থা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
কাশ্মীর হামলার জেরে উত্তপ্ত ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। প্রতিশোধে পাকিস্তান আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ায় চরম ক্ষতির মুখে ভারতের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া—বছরে গচ্চা যেতে পারে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার! ..

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার রেশে আরও একবার আগুন জ্বলছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্কে। ২২ এপ্রিল ঘটে যাওয়া এই হামলায় নিহত হন অন্তত ২৬ জন। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তান পরোক্ষভাবে এ হামলায় যুক্ত। আর এই অভিযোগ ঘিরেই পাল্টাপাল্টি প্রতিক্রিয়া, নিষেধাজ্ঞা আর হুমকিতে দুই দেশের সম্পর্কে দেখা দিয়েছে নতুন করে সংকট।

এই রাজনৈতিক উত্তেজনার সরাসরি ফল ভোগ করছে ভারতের রাষ্ট্রীয় বিমানসংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া। পাকিস্তান তাদের আকাশসীমা ভারতের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার পর, এয়ার ইন্ডিয়ার সামনে খুলেছে বিশাল আর্থিক ক্ষতির দ্বার। বিশ্বখ্যাত বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, পাকিস্তানের আকাশ ব্যবহার করতে না পারায় বিকল্প দীর্ঘপথে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানগুলোকে। যার ফলে বছরে অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় ৫৯১ থেকে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার

এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, কেবল জ্বালানি খরচই বাড়বে না, দীর্ঘ হবে যাত্রার সময়ও। ফলে যাত্রীদের বিরক্তি, সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারা এবং সংস্থার সুনামেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, এই বাড়তি খরচ প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক কাঠামোকে নড়বড়ে করে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পাকিস্তানের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আপাতত ২৩ মে পর্যন্ত ভারতের জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ থাকবে। যদিও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য নয়, তবে এয়ার ইন্ডিয়ার বহু ফ্লাইট এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে চলাচল করে পাকিস্তানি আকাশ ব্যবহার করেই। এখন বিকল্প হিসেবে চিন্তা করা হচ্ছে চীনের আকাশসীমা দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনার। তবে সেই পথও পুরোপুরি খোলা নয়। চীনের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া, আর সে জন্য ভারত সরকারকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অন্যদিকে, পেহেলগাম হামলার পর ভারতের পক্ষ থেকে পাল্টা পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে। সবচেয়ে বড় চমক এসেছে যখন ভারত ১৯৬০ সালের 'সিন্ধু পানি চুক্তি' সাময়িকভাবে স্থগিত করে। এটা শুধু রাজনৈতিক বার্তা নয়, বরং পাকিস্তানের অস্তিত্বের জন্যও এক ধরনের চাপ। কারণ, পাকিস্তানের কৃষি নির্ভর অর্থনীতি অনেকাংশেই এই পানির উপর নির্ভরশীল।

জবাবে পাকিস্তানও চুপ থাকেনি। সিমলা চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা আসে ইসলামাবাদ থেকে। সেই সঙ্গে ভারতের সব ধরনের পণ্য বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। পাশাপাশি, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ ও রেলমন্ত্রী মোহাম্মদ হানিফ আব্বাসি উভয়েই পারমাণবিক হামলার জন্য প্রস্তুতির কথা প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন, যা গোটা অঞ্চলের জন্য ভয়াবহ ইঙ্গিত।

এছাড়া পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পিপিপি নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো আরও একধাপ এগিয়ে গিয়ে বলেন, "সিন্ধু দিয়ে পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত!"—এই বক্তব্য নতুন করে উসকে দিয়েছে যুদ্ধের শঙ্কা।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আমরা প্রতিটি সন্ত্রাসী ও তাদের মদতদাতাকে খুঁজে বের করব এবং এমন শাস্তি দেব যা তারা কখনো কল্পনাও করতে পারবে না। এখন সময় এসেছে সন্ত্রাসের আস্তানা ধ্বংস করার। ১৪০ কোটি মানুষের দৃঢ় সংকল্প সন্ত্রাসের সমর্থকদের চূর্ণ করে দেবে।”

এই মুহূর্তে কেবল দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক নয়, বরং এর প্রভাব পড়ছে বিমান চলাচল, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রায়। এয়ার ইন্ডিয়ার ক্ষতি তার একটি উদাহরণ মাত্র। যদি পরিস্থিতি এমনই থাকে, তাহলে আন্তর্জাতিক মহলেও এর প্রভাব পড়া অনিবার্য।

Inga kommentarer hittades