পাকিস্তান সেনাবাহিনী সোমবার (৫ মে) দ্বিতীয় দফায় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। গত মাসে বিতর্কিত কাশ্মীর অঞ্চলের পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের সম্পর্কে চরম টানাপোড়েন চলছে। ওই হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ২৫ জনই ছিলেন ভারতীয় পর্যটক। এর প্রতিক্রিয়ায় ভারত পাকিস্তানি ভূখণ্ডে বিমান হামলা চালায় এবং পূর্ণাঙ্গ সামরিক প্রতিশোধের হুমকি দেয়। বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা সরাসরি ভারতের সেই হুমকির জবাব।
পাকিস্তানের আন্তঃসার্ভিসেস পাবলিক রিলেশন্স (আইএসপিআর) জানিয়েছে, ঘাত-প্রতিঘাত সক্ষমতা সম্পন্ন এই ক্ষেপণাস্ত্রের নেভিগেশন সিস্টেম ও কৌশলগত কার্যকারিতা যাচাই করাই ছিল পরীক্ষার মূল উদ্দেশ্য। তবে এই কার্যক্রম জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ১১৭২ নং প্রস্তাবের সরাসরি লঙ্ঘন। ১৯৯৮ সালে ভারত ও পাকিস্তানের পারমাণবিক পরীক্ষার পর এই প্রস্তাব পাস করে নিরাপত্তা পরিষদ, যেখানে দক্ষিণ এশিয়ায় অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধে দুই দেশকে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে, পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ যুদ্ধের আতঙ্কে উদ্বিগ্ন। দেশটির চলমান অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই সামরিক উত্তেজনা জনজীবনে নতুন আতঙ্ক যোগ করেছে। ইসলামাবাদের এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী তেহসিন জাহরা (২১) বলেন, "মূল্যস্ফীতি আর বেকারত্বের সঙ্গে এখন যুদ্ধের ভয়—আমাদের কী হবে?" আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা সতর্ক করে দিচ্ছেন, দুই দেশের এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা পুরো দক্ষিণ এশিয়ার জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তৎপরতা বাড়লেও এখনও কোনো কার্যকর হস্তক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। জাতিসংঘ মহাসচিব দুই দেশের মধ্যে সংলাপের আহ্বান জানালেও পাকিস্তানের এই সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক মহল।



















