পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বাসিন্দাদের খাদ্য মজুতের নির্দেশ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার নিয়ন্ত্রণরেখার নিকটবর্তী পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের এলাকার বাসিন্দাদের খাদ্য মজুত করার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীর ..

চরম উত্তেজনার আগুনে কাশ্মীর! ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে জড়ানোর আশঙ্কা, কাশ্মীরে খাদ্য মজুদের নির্দেশ

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:
কাশ্মীরে ভয়াবহ উত্তেজনা! পেহেলগামে রক্তাক্ত হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে। নিয়ন্ত্রণরেখার দু'পাশে চলছে গোলাগুলি, যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে উভয়পক্ষ। স্থানীয়দের দেওয়া হয়েছে খাদ্য মজুদের নির্দেশ—চাপা আগুন কি এবার বিস্ফোরিত হবে?


ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার কেন্দ্রে কাশ্মীর: নিয়ন্ত্রণরেখার নিকটে খাদ্য মজুদের নির্দেশ, যুদ্ধের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে!

কাশ্মীর উপত্যকাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ এক বন্দুকধারীর হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর পর এ উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করেছে। এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে ভারত, যদিও ইসলামাবাদ এর দায় অস্বীকার করেছে।

পেহেলগামের হামলার পর থেকেই ভারতীয় সেনাবাহিনী ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মধ্যে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর টানা অষ্টম রাতের মতো গোলাগুলি চলছে। সীমান্তের দুই পাশে অবস্থিত জনপদের মানুষজন এখন গভীর উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক পর্যায়ে পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

এই উত্তপ্ত প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের সরকার আজ শুক্রবার এক জরুরি নির্দেশনা জারি করেছে। নিয়ন্ত্রণরেখার (LoC) সংলগ্ন ১৩টি নির্বাচনী এলাকার জন্য অন্তত দুই মাসের খাদ্য, ওষুধ এবং মৌলিক প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মজুদ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী আনোয়ার উল হক আজ স্থানীয় পরিষদে বলেন,

“আমরা যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে আমরা জরুরি সরবরাহ নিশ্চিত করছি। খাদ্য, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় পণ্য মজুদের জন্য ১০০ কোটি রুপির একটি বিশেষ তহবিল বরাদ্দ করা হয়েছে।”

সরকার ইতোমধ্যে এসব এলাকায় রাস্তা মেরামতের জন্য সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার ভারী যন্ত্রপাতি মোতায়েন করেছে, যাতে যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে উদ্ধার কার্যক্রম চালানো সহজ হয়।

অন্যদিকে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেনাবাহিনীকে ‘পুরোপুরি স্বাধীনতা’ দিয়েছেন পেহেলগামের হামলার পাল্টা জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে। ভারতের সেনাবাহিনীও পরোক্ষভাবে ইঙ্গিত দিয়েছে, তারা বড় ধরনের অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকেও সজাগ বার্তা এসেছে। ইসলামাবাদ দাবি করেছে, তাদের কাছে নির্ভরযোগ্য তথ্য রয়েছে যে ভারত একটি সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করছে। এর জবাবে যে তারা চুপ করে থাকবে না, তাও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান।

এই অবস্থায় পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের প্রশাসন আরও এক বিস্ময়কর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্ভাব্য নিরাপত্তা হুমকির আশঙ্কায় সেখানে অন্তত ১০ দিনের জন্য এক হাজারেরও বেশি মাদ্রাসা তথা ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কাশ্মীর উপত্যকা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের এই দ্বন্দ্ব নতুন নয়। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত বিভক্ত হওয়ার পর থেকেই এই অঞ্চলটি উভয় দেশ তাদের নিজের অংশ বলে দাবি করে আসছে। কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে ইতিপূর্বে তিনটি বড় যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। বর্তমানে চলমান উত্তেজনা অনেক বিশেষজ্ঞের মতে চতুর্থ যুদ্ধের সম্ভাবনাকে সামনে নিয়ে আসছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন,

“যদি দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তাহলে তা শুধু দক্ষিণ এশিয়ার জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্য উদ্বেগজনক হয়ে উঠবে।”


 

বর্তমান পরিস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ার আকাশে যুদ্ধের মেঘ ঘনিয়ে উঠেছে। কূটনৈতিকভাবে উত্তেজনা প্রশমনের কোনো চেষ্টা না হলে, এই সীমান্ত সংঘাত যেকোনো সময় বড় ধরণের সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে। আর এই যুদ্ধের আগুনে পুড়বে হাজারো সাধারণ মানুষের ঘর, স্বপ্ন ও জীবন।

Nessun commento trovato