close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

পাক সেনাবাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় প্রক্সি সংগঠনের সংঘর্ষ, নিহত ১৪  ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানে ভয়াবহ সংঘর্ষ! নিষিদ্ধ ভারত-সমর্থিত জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সেনাবাহিনীর তীব্র লড়াই—নিহত ১২ জঙ্গি ও ২ সাহসী সেনা। বিস্তারিত জানুন রোমাঞ্চকর এই অভিযানের পূর্ণ বি..

পাকিস্তানে ভারতীয় মদদপুষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর তাণ্ডব—১৪ জনের মৃত্যুতে উত্তপ্ত খাইবার ও বেলুচিস্তান

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দুই অস্থির এলাকা—খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানে পৃথক পৃথক সংঘর্ষে নিহত হয়েছে অন্তত ১৪ জন। এর মধ্যে রয়েছে ভারতীয় মদদপুষ্ট ১২ জন সন্ত্রাসী এবং পাকিস্তানের দুই সাহসী সেনাসদস্য। দেশটির সামরিক বাহিনীর মিডিয়া শাখা আইএসপিআরের বরাতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

এই অভিযানকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ‘গোয়েন্দাভিত্তিক অপারেশন’ বা আইবিও বলে উল্লেখ করেছে। শনিবার (১৭ মে) এবং রোববার (১৮ মে) এই অভিযানে সরাসরি অংশ নেয় পাকিস্তানের অভিজাত সেনা ইউনিট। লক্ষ্য ছিল—দুইটি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন: তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং বেলুচিস্তান লিবারেশন ফ্রন্ট (বিএলএফ), যারা দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় সহায়তায় পাকিস্তানের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করছে বলে দাবি সেনাবাহিনীর।

লাক্কি মারওয়াতে ভারতীয় স্পনসরড জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের লাক্কি মারওয়াত জেলায় সেনাবাহিনী চালায় বিশেষ অভিযান। এই অভিযানে পাঁচজন ভারতীয় মদদপুষ্ট জঙ্গি নিহত হয়। একই জেলায় দ্বিতীয় আরেকটি অভিযানে আরও দুই সন্ত্রাসীকে ঘায়েল করে সেনারা। অভিযানে ব্যবহৃত হয় উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি ও গোয়েন্দা তথ্য।

আইএসপিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, "এই সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ভারতীয় নকশা অনুযায়ী হামলার পরিকল্পনা করছিল। তাদের উপস্থিতির খবর পাওয়া মাত্রই অভিযান শুরু হয় এবং শত্রুদের দমন করা হয়।"

উত্তর ওয়াজিরিস্তানে অতর্কিত হামলায় জবাব দেয় সেনা

উত্তর ওয়াজিরিস্তানের মির আলী অঞ্চলে সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীর একটি কনভয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। প্রতিক্রিয়ায় সেনাবাহিনী পাল্টা গুলি চালায় এবং দুইজন সন্ত্রাসীকে হত্যা করে। এই সংঘর্ষ ছিল অত্যন্ত তীব্র ও প্রাণঘাতী।

বেলুচিস্তানে সংঘর্ষ: শহিদ হলেন দুই বীর সেনা

বেলুচিস্তানের আওরান জেলার গিশকুর এলাকায় ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসীদের সঙ্গে মুখোমুখি হয় সেনাবাহিনী। তীব্র গুলি বিনিময়ে ‘ইউনাস’ নামের একজন গুরুত্বপূর্ণ সন্ত্রাসী নিহত হয়। একইদিনে কেচ জেলার তুরবাত শহরে আরেকটি অভিযান চালানো হয়, যেখানে আরও দুই ভারতীয় প্রক্সি জঙ্গিকে হত্যা করা হয়।

এই অভিযানে পাকিস্তানের দুই সেনাসদস্য শহীদ হন। তারা হলেন—

  • সিপাহী ফরহাদ আলী তুরি (বয়স ২৯, কুর্রাম জেলার বাসিন্দা)

  • ল্যান্স নায়েক সাবির আফ্রিদি (বয়স ৩২, কোহাট জেলার বাসিন্দা)

আইএসপিআর বলেছে, "এই দুই বীর সেনা মাতৃভূমির জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। পাকিস্তান জাতি তাদের সাহসিকতাকে শ্রদ্ধা জানায়।"

সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার

বিভিন্ন অভিযানে সেনাবাহিনী বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে। এসব অস্ত্রের বেশিরভাগ ভারতীয় উৎস থেকে আসা বলে দাবি করছে সেনাবাহিনী। উদ্ধারকৃত সামগ্রীর মাধ্যমে স্পষ্ট যে এই গোষ্ঠীগুলো পাকিস্তানে বড় ধরনের নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা করছিল।

সেনাবাহিনীর সতর্ক বার্তা: ভারতীয় প্রক্সিদের রুখে দেওয়া হবে

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী আইএসপিআর থেকে কড়া বার্তা দিয়ে বলা হয়েছে, “জাতির সমর্থন নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বেলুচিস্তানসহ সারাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। যেকোনো ভারতীয় প্রক্সি এবং মদদপুষ্ট গোষ্ঠী পাকিস্তানের অভ্যন্তরে কোনো ষড়যন্ত্র করতে পারবে না।”



এই সাম্প্রতিক সংঘর্ষগুলোর মাধ্যমে আবারও স্পষ্ট হয়েছে যে, পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বর্তমানে চরম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ভারতীয় সহায়তায় পরিচালিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে কঠোর হাতে দমন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ দেশটির সেনাবাহিনী। তবে সংঘর্ষে সেনাসদস্যদের প্রাণহানিতে জাতি শোকাহত। এখন প্রশ্ন, এই সীমান্তবর্তী সংঘর্ষ শেষ পর্যন্ত কোন দিকে মোড় নেবে?

コメントがありません