close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

পাক-ভারত সং ঘাতে মিডিয়ার ‘সার্কাস’, তীব্র ক্ষো ভ সোনাক্ষীর..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
পাক-ভারত সামরিক উত্তেজনার সময় টিভি চ্যানেলগুলোর নাটকীয়তা ও আতঙ্ক ছড়ানো কভারেজে বিরক্ত বলিউড অভিনেত্রী সোনাক্ষী সিনহা। মিডিয়ার ‘সার্কাস’ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দিলেন এক খোলা বার্তা।..

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সামরিক উত্তেজনা যখন নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে, ঠিক সেই সময় দেশের টেলিভিশন মিডিয়াকে একহাত নিলেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সোনাক্ষী সিনহা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সাম্প্রতিক কভারেজ দেখে তিনি এতটাই হতাশ যে একে ‘সার্কাস’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

গতকাল শুক্রবার (৯ মে) রাতে ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক স্টোরিতে সোনাক্ষী লেখেন,
“আমাদের নিউজ চ্যানেলগুলো একটা রসিকতায় পরিণত হয়েছে!”
এই বক্তব্যের মধ্য দিয়েই তিনি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে বর্তমান সংবাদমাধ্যম শুধু আতঙ্ক ছড়াচ্ছে এবং সেনসেশনাল উপস্থাপনাকে গুরুত্ব দিচ্ছে, তথ্যভিত্তিক সাংবাদিকতাকে নয়।

 মিডিয়াকে উদ্দেশ করে কড়া ভাষা

সোনাক্ষীর ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে লেখা ছিল:
“এই চিৎকার, চেঁচামেচি, ওভারড্রামাটিক ভিজ্যুয়াল আর সাউন্ড ইফেক্ট—আপনারা কী করছেন? শুধু আপনাদের কাজটা করুন, ঘটনা যেভাবে ঘটেছে সেভাবেই রিপোর্ট করুন।”
তিনি আরও বলেন, “যুদ্ধকে সেনসেশনাল করে তুলে ধরবেন না, আর মানুষকে আতঙ্কিত করবেন না—যাঁরা এমনিতেই উদ্বিগ্ন। দয়া করে সত্যিকারের কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র খুঁজে নিন আর সেটাই অনুসরণ করুন… সংবাদের নামে এই আবর্জনা দেখা বন্ধ করুন।”

সোনাক্ষীর এমন কড়া বক্তব্য মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় এবং নেটিজেনদের মধ্যে সৃষ্টি হয় নানা প্রতিক্রিয়া। কেউ তার সাহসিকতার প্রশংসা করেন, আবার কেউ বলেন, মিডিয়াকে প্রশ্ন করার এই সময়টা একেবারে সঠিক।

 প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সতর্কবার্তা

সোনাক্ষীর এই বক্তব্যের আগে, ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একটি জরুরি পরামর্শনামা জারি করে। তাতে স্পষ্টভাবে বলা হয়,
"গণমাধ্যম এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলো যেন কোনো সামরিক অভিযানের লাইভ বা রিয়েল-টাইম সম্প্রচার না করে, কারণ এতে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে এবং সেনাদের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।”

মন্ত্রণালয় ২৬/১১ মুম্বাই হামলা, কারগিল যুদ্ধ এবং কান্দাহার বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনা তুলে ধরে সংবাদমাধ্যমকে অতীত থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানায়। এই সতর্কবার্তা সামনে আসার পরপরই সোনাক্ষীর স্টোরি সামনে আসে, যেটা পরিস্থিতিকে আরও আলোচিত করে তোলে।

 যুদ্ধ নয়, যেন রিয়েলিটি শো!

সোনাক্ষীর মূল অভিযোগ—ভারতের বহু সংবাদমাধ্যম এখন যুদ্ধ পরিস্থিতিকেও বিনোদনের মোড়কে পরিবেশন করছে। যুদ্ধ, সংঘাত, কৌশলগত পদক্ষেপ—এসব নিয়ে দায়িত্বশীল রিপোর্টিংয়ের পরিবর্তে তারা অতিনাটকীয় প্রেজেন্টেশনকে বেছে নিচ্ছে। এতে দেশের সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হচ্ছেন, বিভ্রান্ত হচ্ছেন।

সোনাক্ষী বলেন, “এমনিতেই মানুষ উদ্বিগ্ন, আপনি যদি তাদের আতঙ্কিত করে তোলেন—তবে আপনি সাংবাদিক নন, একজন নাট্যপরিচালক!”

 যুদ্ধ পরিস্থিতি: পাক-ভারত উত্তেজনার পটভূমি

বৃহস্পতিবার (৮ মে) পাকিস্তান ভারতের গুজরাট, পাঞ্জাব, রাজস্থান এবং জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলে একাধিক ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। তবে ভারতীয় সেনাবাহিনী এসব হামলা সফলভাবে প্রতিহত করেছে বলে দাবি করেছে।

পাকিস্তানের এই হামলা ছিল ভারতের চালানো ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর জবাব। ৭ মে ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি জঙ্গি ঘাঁটিতে সুনির্দিষ্ট অভিযান চালায়। দুই দেশের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই সংবাদমাধ্যমগুলো ব্যাপকভাবে ঘটনাগুলো কভার করতে থাকে—কিন্তু সেই কভারেজ নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক।


 মিডিয়া কি ভুল পথে হাঁটছে?

সোনাক্ষীর বক্তব্য একটি বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে—বর্তমানে সংবাদমাধ্যম কি তাদের মূল দায়িত্ব ভুলে গিয়ে ‘টিআরপি’র দৌড়ে সামরিক বিষয়ক সংবেদনশীলতাও বিসর্জন দিচ্ছে? এমন এক সংকটময় মুহূর্তে মিডিয়ার ভূমিকা হওয়া উচিত তথ্যভিত্তিক, দায়িত্বশীল এবং আতঙ্কহীন উপস্থাপনা। কিন্তু বাস্তবে হচ্ছে উল্টোটা।

সোনাক্ষীর বক্তব্য শুধু একজন তারকার কণ্ঠস্বর নয়—এটা দেশের বহু সাধারণ মানুষেরও মনের প্রতিধ্বনি।

Walang nakitang komento