অস্থিতিশীল করতে পারে দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সংকট : তৌহিদ

Mahamud Mithu avatar   
Mahamud Mithu
দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের আহ্বানের সাথে বাংলাদেশ ও আঞ্চলের অস্থিতিশীলতা উভয়ের জন্যই হুমকি বাড়ছে।....

দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সংকট অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করতে পারে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন আজ সতর্ক করে বলেছেন। তিনি এই সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন।... (অতিরিক্ত বিস্তারিত লেখা) ...দীর্ঘ দিন ধরে বাস্তুচ্যুতির বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে তৌহিদ হোসেন বলেন... (অতিরিক্ত বিস্তারিত লেখা) ...তিনি অন্যান্য চলমান সংঘাত সত্ত্বেও রোহিঙ্গা সংকটকে বৈশ্বিক এজেন্ডায় রাখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন আজ সতর্ক করে বলেছেন যে, দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশ ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা উভয়ের জন্যই হুমকি বাড়াচ্ছে। তিনি এই সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন।মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ভবিষ্যৎকে ভয়াবহ বলে বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বোঝা হয়ে থাকা সত্ত্বেও আমরা এখনও এই সংকটের কার্যকর সমাধান খুঁজে পাইনি।’ রাজধানীতে যৌথভাবে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ (এএফডি) এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস (বিইউপি) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন: আঞ্চলিক নিরাপত্তার উপর কৌশলগত প্রভাব ও ভবিষ্যত উপায়’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তৃতাকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান এবং এএফডির প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এসএম কামরুল হাসান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।রোহিঙ্গা সমস্যাকে ‘অত্যন্ত দীর্ঘায়িত সমস্যা’ হিসেবে অভিহিত করে তৌহিদ হোসেন বলেন, বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীকে পূর্ণ অধিকার ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা সহকারে স্বেচ্ছায় তাদের স্বদেশে ফিরে যেতে দেওয়া উচিত।তিনি বলেন, ‘তারা (রোহিঙ্গারা) এমন কোনও জায়গায় ফিরে যাবে না যেখানে তাদের জীবন ঝুঁকির সম্মুখীন এবং তাদের অধিকার ক্ষুন্ন হবে। অন্তত এখানকার শিবিরগুলিতে তাদের নিরাপত্তা রয়েছে।’ উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, ‘২০১৭ সালেই কেবল প্রথম রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুতি ঘটেনি। এর আগেও, প্রায় ৩০০,০০০ মানুষ ধীরগতিতে, ধারাবাহিকভাবে সীমান্ত অতিক্রম করেছে। এটি একটি দীর্ঘ দিনের সংকট।’ ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংস দমন-পীড়নের মুখে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।বাংলাদেশ এখন কক্সবাজার এবং ভাসানচর দ্বীপের শিবিরগুলোতে ১৩ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে। কিন্তু গত আট বছরে একজনও রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসন করা হয়নি।তৌহিদ উলে¬খ করেছেন যে, যদিও দ্বিপাক্ষিক কূটনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রাথমিকভাবে প্রচেষ্টা চালিয়েছিল, তবুও এই প্রয়াসের কোনও বাস্তব ফলাফল পাওয়া যায়নি।দ্বিপাক্ষিক কূটনীতির উপর বাংলাদেশের প্রাথমিক নির্ভরতার সমালোচনা করে উপদেষ্টা বলেন, তিনিসহ অনেকেই সতর্ক করেছিলেন যে, এই ধরনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে।তিনি বলেন, ‘এবার উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন। মিয়ানমারের সামরিক সরকারের পরিকল্পিত পদক্ষেপ ছিল যাতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে তাদের ভূখণ্ড থেকে স্থায়ীভাবে নির্মূল করা যায়।’তিনি বলেন, "আমরা কূটনীতি পরিত্যাগ করতে পারি না। আমরা দ্বিপাক্ষিক আলোচনা বন্ধ করতে পারি না, তবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে খুব বেশি আশাবাদী হওয়া উচিত নয়।" তৌহিদ মিয়ানমারের বিভক্ত অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কাঠামোর অংশ সামরিক জান্তা, আরাকান আর্মি এবং জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি)-কে প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে একটি প্রধান বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।তৌহিদ জোর দিয়ে বলেন, যেকোনো স্থায়ী প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টায় সকল অংশীদারদের, বিশেষ করে বর্তমানে রাখাইন রাজ্যের বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণকারী আরাকান আর্মিকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।দীর্ঘ দিন ধরে বাস্তুচ্যুতির বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে তৌহিদ হোসেন বলেন, বাস্তুচ্যুত লোকজন দীর্ঘ সময় ধরে শিবিরে থাকার ফলে শিবিরগুলো অস্থিরতার উর্বর ভূমিতে পরিণত হয়েছে।তিনি আরও বলেন, ‘দশ লাখ মানুষ - যাদের অর্ধেকই তরুণ - অনির্দিষ্টকালের জন্য তারা শান্তিপূর্ণ থাকবে বলে আশা করা অবাস্তব। এই অমীমাংসিত সংকট উগ্রবাদকে ইন্ধন জোগাচ্ছে এবং অঞ্চলটি অস্থিতিশীল হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।’তিনি অন্যান্য চলমান সংঘাত সত্ত্বেও রোহিঙ্গা সংকটকে বৈশ্বিক এজেন্ডায় রাখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

Không có bình luận nào được tìm thấy