২০২৪ সালের শুরুতে বাংলাদেশের অর্থনীতি মুখোমুখি হচ্ছে এক ভীষণ সংকটের। অর্থপাচার, দুর্নীতি, দুঃশাসন ও লুটপাটের কারণে বিপর্যস্ত অর্থনীতির পুনরুদ্ধার এক বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির, শিল্প খাতে শ্রম অসন্তোষ এবং নতুন বিনিয়োগের অভাবে দেশটির অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি, খেলাপি ঋণ, এবং ডলারের অস্থিরতা দেশটির ভবিষ্যৎ আর্থিক অবস্থা নিয়ে দুশ্চিন্তা সৃষ্টি করেছে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সরকারের নীতিগত পদক্ষেপের ওপরই নির্ভর করছে আগামী দিনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ১১ শতাংশ ছাড়িয়েছে এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ১৩.৮৮ শতাংশে পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতিতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমছে, যা দেশের অর্থনৈতিক কষ্টকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
ব্যাংক খাতের দুর্বলতা ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, খেলাপি ঋণ আগামী ছয় মাসের মধ্যে ২৫-৩০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। তবে, আইএমএফ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার পূর্বাভাসও আশঙ্কাজনক, যেখানে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশের নিচে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া, তৈরি পোশাক খাতের মালিকরা জানাচ্ছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অন্যান্য সংকটের কারণে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা এবং নতুন বিনিয়োগের অভাবে দেশের অর্থনীতিতে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, যা আগামী বছরেও চলতে থাকতে পারে।
বাংলাদেশের জন্য ২০২৪ একটি অগ্নিপরীক্ষা হতে যাচ্ছে, যেখানে রাজস্ব আয় বাড়ানো, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা দূর করা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে, সরকার যদি সঠিক নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তাহলেই সম্ভব হবে এই সংকট কাটিয়ে উঠা।
Tidak ada komentar yang ditemukan