close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

অর্থ উপদেষ্টার আহ্বানে সাড়া দেননি এনবিআরের আন্দোলনকারীরা, মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি ঘোষণা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
চেয়ারম্যান অপসারণ না হলে ২৮ জুন থেকে শাটডাউনের হুঁশিয়ারি; অর্থ উপদেষ্টার ডাকা বৈঠকে যোগ দিচ্ছে না এনবিআরের আন্দোলনকারীরা।..

অর্থ উপদেষ্টার আলোচনার আহ্বান সরাসরি প্রত্যাখ্যান করল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এনবিআরের সংস্কার দাবিতে চলমান কলমবিরতি কর্মসূচির মধ্যেই তারা ঘোষণা দিল, বৃহস্পতিবারের নির্ধারিত বৈঠকে তারা অংশ নেবে না। বরং নতুন করে ঘোষণা এসেছে ‘মার্চ টু এনবিআর’ নামে দুর্বার কর্মসূচি।

আজ বিকেলে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে— "চেয়ারম্যানের অপসারণ ছাড়া কোনো আলোচনা নয়।" অন্যদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দুপুরেই জানানো হয়েছিল, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বৃহস্পতিবার বিকেলে এনবিআর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান। কিন্তু সেই আহ্বান বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণে এনবিআরের চলমান অচলাবস্থা আরও ঘনীভূত হলো।

আজ সকাল থেকেই আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনের সামনের চত্বরে ভিড় জমাতে থাকেন শত শত কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাদের মূল দাবি— বর্তমান চেয়ারম্যানকে দ্রুত অপসারণ করতে হবে, নতুবা রাজস্ব ব্যবস্থায় কাঙ্ক্ষিত সংস্কার সম্ভব নয়।

সংস্কার পরিষদের আহ্বানে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা এসেছে আজ। ২৮ জুন সারাদেশের কর, কাস্টমস ও ভ্যাট দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একযোগে ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি পালন করবেন। তারা রাজধানীর এনবিআর ভবনের দিকে রওনা হবেন এবং জাতীয়ভাবে নিজেদের অবস্থান জানান দেবেন।

এর আগেই ২৭ জুনের মধ্যে চেয়ারম্যানকে অপসারণ না করলে ২৮ জুন থেকে লাগাতার ‘কমপ্লিট শাটডাউন’-এ যাবে এনবিআরের সব দপ্তর। কেবল আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এর আওতামুক্ত থাকবে। অন্যথায়, কর, কাস্টমস ও ভ্যাট সংক্রান্ত কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে।

এনবিআর সংস্কার পরিষদ এক দফা দাবি জানিয়েছে—চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে। রাজস্ব ব্যবস্থায় নতুন যাত্রার শুরু সেখান থেকেই।

সংগঠনটি আরও জানিয়েছে, ৭ জুলাই একটি পূর্ণাঙ্গ সংস্কার রূপরেখা তুলে ধরা হবে, যেখানে রাজস্ব ব্যবস্থার কাঠামো ও আধুনিকায়নের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা থাকবে।

গত ১২ মে সরকার একটি অধ্যাদেশ জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে দুটি নতুন বিভাগ— রাজস্ব নীতি বিভাগ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ গঠন করে। এই পরিবর্তনের প্রতিবাদেই এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একত্রিত হয়ে আন্দোলনে নামেন।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ মে সরকার ঘোষণা দেয়— ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আলোচনা করে অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা হবে। কিন্তু আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, সরকার সময়ক্ষেপণ করছে, আলোচনার নামে আন্দোলন ভাঙার চেষ্টা করছে।

  • ২০ জুন (বৃহস্পতিবার): দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সারাদেশের এনবিআর দপ্তরে কলমবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি।

  • ২৭ জুন: চেয়ারম্যান অপসারণের আলটিমেটাম শেষ দিন।

  • ২৮ জুন: ‘মার্চ টু এনবিআর’ ও লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন শুরু হবে, যদি দাবি পূরণ না হয়।

  • ৭ জুলাই: রাজস্ব ব্যবস্থার পূর্ণাঙ্গ সংস্কার রূপরেখা প্রকাশ।


এই প্রতিবাদ শুধু একটি নিয়োগবিরোধ নয়, বরং এটি সরকারের রাজস্ব নীতির প্রতি গভীর অসন্তোষ ও কার্যকর সংস্কারের ডাক।
চেয়ারম্যানের অপসারণ হবে কি না, আর ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কোথায় গড়ায়— এখন পুরো দেশের রাজস্ব ব্যবস্থাই তাকিয়ে রয়েছে আগামী ২৭-২৮ জুনের দিকে।

コメントがありません