close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

অপহরণ আতঙ্কে পেশা বদলাচ্ছেন বনজীবীরা! সুন্দরবনে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে দস্যুরা

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সরকারিভাবে দস্যুমুক্ত ঘোষিত হওয়ার পরও আবারও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে সুন্দরবনের বনদস্যুরা। সাম্প্রতিক সময়ে দস্যুদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় জীবন ও জীবিকা হারানোর শঙ্কায়
সরকারিভাবে দস্যুমুক্ত ঘোষিত হওয়ার পরও আবারও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে সুন্দরবনের বনদস্যুরা। সাম্প্রতিক সময়ে দস্যুদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় জীবন ও জীবিকা হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন বনজীবীরা। চাঁদার দাবিতে একের পর এক হামলা, অপহরণ এবং মুক্তিপণের জন্য জেলেদের জিম্মি করার ঘটনায় বনজীবীদের মধ্যে ভয় কাজ করছে। ফলে অনেকেই এখন পেশা বদলে অন্য কাজের দিকে ঝুঁকছেন, যা বনবিভাগের রাজস্ব আয়েও ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। আবারও ফিরে এলো দস্যুদের তাণ্ডব! এক সময় সুন্দরবন ছিল দস্যুদের অভয়ারণ্য, যেখানে অপহরণ, ডাকাতি এবং চাঁদাবাজি ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। তখন জেলেরা দস্যুদের হাতে জিম্মি হয়ে জীবন বাঁচাতে বাধ্য হতেন মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দিতে। ২০১৬-২০১৮ সালের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অভিযানে ৩২৪ জন বনদস্যু আত্মসমর্পণ করলে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করা হয়। তবে, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো প্রমাণ করছে যে, দস্যুরা আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। দস্যুদের হুমকিতে আতঙ্কিত বনজীবীরা গত ২৭ জানুয়ারি, সুন্দরবনের দুবলারচরের কাছে কমান্ডো স্টাইলে জেলেদের ওপর হামলা চালায় বনদস্যু দয়াল বাহিনী। তাদের লক্ষ্য ছিল জেলেদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করা। তবে, সাহসী কিছু জেলে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং তিনজন দস্যুকে আটক করে কোস্টগার্ডের হাতে তুলে দেয়। এর প্রতিশোধ হিসেবে পরের দিন দস্যুরা ১৫ জন জেলেকে অপহরণ করে। অপহরণের ১৭ দিন পর ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে এসেছেন ৯ জন জেলে। তারা জানান, দস্যুরা তাদের নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে অনেকে স্থায়ীভাবে সুন্দরবনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পেশা পরিবর্তনে বাধ্য হচ্ছেন বনজীবীরা দস্যুদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় মোংলার চিলা ইউনিয়নের জেলে অমৃত বৈরাগী জানান, তারা এখন নিরাপদ বোধ করছেন না। ফলে বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় যেতে হচ্ছে। অনেক জেলে এখন দিনমজুরের কাজ করছেন, যা তাদের জন্য একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা। রাজস্ব আয়েও ব্যাপক ধস বনজীবীদের সুন্দরবনে না যাওয়ার ফলে বনবিভাগের রাজস্ব আদায়েও ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। চাঁদপাই স্টেশন কর্মকর্তা মিল্টন রায় জানান, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম ১৫ দিনে ৪৭৮টি পাস পারমিট ইস্যু করা হয়েছিল, অথচ ২০২৫ সালের একই সময়ে পারমিট সংখ্যা নেমে এসেছে ২৩৬টিতে। যা আয়ের দিক থেকে ৫০% এর বেশি কমেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার তারেক আহম্মেদ জানান, তারা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছেন এবং কিছু অপরাধীকে আটকও করেছেন। তবে দস্যুরা বারবার গোপন আস্তানা বদলানোর কারণে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হচ্ছে না। সুন্দরবনের বনজীবীরা দীর্ঘদিন ধরে জীবিকার জন্য নির্ভরশীল থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতি তাদের জন্য চরম উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে দস্যুদের দৌরাত্ম্যে শুধু বনজীবীরাই নয়, সরকারের রাজস্ব আদায়েও বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরও কঠোর অভিযান প্রয়োজন যাতে বনজীবীরা আবারও নিরাপদে সুন্দরবনে ফিরতে পারেন এবং তাদের জীবন-জীবিকা বজায় রাখতে পারেন।
Ingen kommentarer fundet


News Card Generator