অপারেশন সিঁদুর’ ঘিরে ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রস্তুতি: হামলার অপেক্ষায় ছিল যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
২২ এপ্রিলের জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তানে হামলার একেবারে প্রস্তুত ছিল ভারতীয় নৌবাহিনী। যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন ছিল ‘হট স্ট্যান্ডবাই’ অবস্থায়, লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের জন্য অপেক্ষমাণ।..

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিশোধমূলক হামলার প্রস্তুতিতে এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে দাঁড়িয়েছিল ভারত। ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরীহ নাগরিক নিহত হওয়ার পর প্রতিক্রিয়ায় ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের এক গোপন সামরিক অভিযান শুরু করে।
৬ ও ৭ মে পরিচালিত এ অভিযানে ভারত শুধু সীমান্তে নয়, বরং সমুদ্র, আকাশ এবং স্থলপথ—তিনটি পথেই পাকিস্তানে হামলার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক গোপন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, পুরো অপারেশন চলাকালে ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিনগুলো “হট স্ট্যান্ডবাই” অবস্থায় ছিল। অর্থাৎ, মুহূর্তেই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে পাকিস্তানের ভিতরে আঘাত হানার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত ছিল তারা।
বিশেষ করে করাচি বন্দরে অবস্থানরত পাকিস্তানি যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন এবং সেনা স্থাপনাগুলোর উপর আঘাত হানার লক্ষ্যে যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিনগুলো মোতায়েন রাখা হয়।

অভিযানে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছিল ভারতীয় তৈরি সুপারসনিক ব্রহ্মোস মিসাইল, পাশাপাশি রাশিয়ান ‘ক্লাব’ সিরিজের ল্যান্ড-অ্যাটাক ক্ষেপণাস্ত্র—যেগুলো ‘কিলো ক্লাস’ সাবমেরিনে স্থাপন করা ছিল।
সূত্রের ভাষায়, “সাবমেরিন ও যুদ্ধজাহাজ দুটোই প্রস্তুত ছিল উৎক্ষেপণের জন্য, শুধু নির্দেশের অপেক্ষা ছিল।

ভারতের এমন শক্তিশালী যুদ্ধপ্রস্তুতির বিপরীতে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া ছিল আত্মরক্ষামূলক। ভারতীয় আধুনিক প্রযুক্তির মুখে পাকিস্তান তার ফ্রিগেট ও করভেট শ্রেণির যুদ্ধজাহাজগুলো করাচি বন্দরে ফিরিয়ে নেয়।
তাদের বাহিনী সমুদ্রে যেতে সাহস পায়নি। ভারতের আধিপত্যের মুখে সমুদ্রপথে কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে পাকিস্তান।

সমুদ্রপথের পাশাপাশি আকাশপথেও ভারত আধিপত্য কায়েম করে। বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রান্ত ও তার অন্তর্ভুক্ত মিগ-২৯কে যুদ্ধবিমান উত্তর আরব সাগরে টহল দিয়ে পাকিস্তানের আকাশসীমা কার্যত নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়।
একসময় পাকিস্তানের নজরদারি বিমান আরএএস-৭২সি ঈগল সাগরে আসার চেষ্টা করলে মিগ-২৯কে সেটিকে বাধা দেয়।
মাত্র কয়েকশ মিটার দূরে চলে এলে পাকিস্তানি বিমানটি কার্যক্রম বন্ধ করে উপকূলের দিকে ফিরে যেতে বাধ্য হয়।

শুধু সমুদ্র ও আকাশ নয়, স্থলভিত্তিক হামলার কথাও এনডিটিভির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
যদিও এসব অস্ত্র বা প্রযুক্তির বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি, তবে উচ্চ পর্যায়ের সামরিক সমন্বয় এ অভিযানের মূল বৈশিষ্ট্য।

‘অপারেশন সিঁদুর’ ছিল এক অনন্য অভিযান—যেখানে বায়ু, নৌ ও স্থলবাহিনী একযোগে অংশ নিয়েছে। এই সমন্বিত সামরিক শক্তি কেবল পাকিস্তান নয়, গোটা বিশ্বকে ভারতের প্রতিরক্ষা সক্ষমতার একটি শক্ত বার্তা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অপারেশন সিঁদুর ছিল যুদ্ধ শুরুর এক ধাপ আগের চূড়ান্ত প্রস্তুতি।

যদিও ভারত শেষ পর্যন্ত সরাসরি করাচিতে হামলা চালায়নি, কিন্তু অপারেশন সিঁদুর ঘিরে তাদের প্রস্তুতি ও সামরিক তৎপরতা স্পষ্ট করে দেয়—প্রয়োজনে দেশটি কখনোই চুপ করে বসে থাকবে না।
এ অভিযানের মধ্য দিয়ে ভারতীয় বাহিনীর যৌথ কার্যক্রম, আধুনিক প্রযুক্তি ও সমুদ্র-আকাশ দখলের বাস্তবতা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বড় বার্তা দিয়ে গেছে।

No comments found


News Card Generator