close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

অন্তর্বর্তী সরকারকে চ্যালেঞ্জ করা ক্যু’র শামিল : আসাদুজ্জামান ফুয়াদ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ দাবি করেছেন, সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্য ইখতিয়ার অতিক্রম করেছে। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে চ্যালেঞ্জ করা মানে মিলিটারি ক্যু’র ছক, যা দেশের সংবিধান..

সেনাপ্রধানের বক্তব্য ম্যান্ডেট লঙ্ঘনের সামিল, অন্তর্বর্তী সরকারকে চ্যালেঞ্জ মানেই ক্যু’র ছক: আসাদুজ্জামান ফুয়াদ

নাটোর, ২৪ মে:
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে ‘আমার বাংলাদেশ পার্টি’ (এবি পার্টি)। দলের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ দাবি করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করা বা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া মানে মিলিটারি ক্যু’র শামিল, যা দেশের সংবিধান, গণতন্ত্র এবং জনগণের ম্যান্ডেটের বিরুদ্ধে যায়।

শনিবার (২৪ মে) নাটোর শহরের একটি রেস্তোরাঁয় জেলার কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব মন্তব্য করেন তিনি। ফুয়াদ বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বৈঠক হয়। এরপর সেনাবাহিনীর অফিসার্স অ্যাড্রেস হয়, যেখানে সেনাপ্রধানের বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।”

তিনি বলেন, “যদিও এই বক্তব্যের অফিসিয়াল কোনো বিবৃতি আইএসপিআর থেকে আসেনি, তবে আমরা যদি ধরে নিই তিনি এই কথাগুলো বলেছেন, তাহলে বলতে হয়— এই বক্তব্য ইখতিয়ার অতিক্রম করেছে। সেনাবাহিনীর প্রধান রাজনৈতিক বিশ্লেষক হতে পারেন না। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন কী সময়ে হওয়া উচিত’, ‘আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা উচিত’, এমনকি সরকার কতদিন ক্ষমতায় থাকবে, সেসব নিয়েও মত দিয়েছেন। এসব বক্তব্য তাদের এখতিয়ার বহির্ভূত।”

সেনাবাহিনী ‘অভিভাবকহীন’ নয়

আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রশ্ন তুলেছেন, “সেনাপ্রধান বলেছেন তিনি অভিভাবকহীন— এটা কেন বলছেন? দেশে তো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রয়েছে, যা জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত একটি সরকার। যে সরকারকে দেশের সব রাজনৈতিক দল সম্মতি দিয়েছে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী গণম্যান্ডেটপ্রাপ্ত সরকার।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, সেনাবাহিনী— কারও পাবলিক ফোরামে রাজনীতি নিয়ে কথা বলার এখতিয়ার নেই। তাদের কাজ হল যে সরকার ক্ষমতায় আছে, তাদের অধীনে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা। অতীতে ১/১১ পর্বে আমরা দেখেছি কিভাবে রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব দিল্লির চাপে হাতছাড়া হয়েছে। আমরা চাই না সেই অধ্যায় ফিরে আসুক।”

ভারতীয় প্রভাব ও “দিল্লির গোলামি” প্রসঙ্গ

ভারতের গণমাধ্যমে যে ধরণের বক্তব্য ও শব্দ ব্যবহার হচ্ছে, সেই একই ধরণের বক্তব্য সেনাপ্রধানের পক্ষ থেকেও আসছে বলে অভিযোগ তোলেন ফুয়াদ। তিনি বলেন, “এই ‘দিল্লির গোলামি’ থেকে আমরা ১৪০০ জন শহিদের রক্তের বিনিময়ে মুক্ত হয়েছি। এখন আবার সেই ভারতীয় ন্যারেটিভ ফিরিয়ে আনার চেষ্টাকে মীর জাফরের মতো বাংলার স্বার্থ বিক্রির চেষ্টা মনে করি।”

সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান

এবি পার্টির নেতা স্পষ্টভাবে বলেন, “আমরা সকল বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাই— পেশাদারিত্ব বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করুন। আপনি যদি প্রধান উপদেষ্টার কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে মত দেন, সেটা আলোচনার মাধ্যমে জানান। কিন্তু পাবলিক ফোরামে রাজনীতির ব্যাখ্যা দেওয়া আপনাদের কাজ নয়। এটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ।”

এ সময় এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, নাটোর জেলা আহ্বায়ক মো. শাহ আলমসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।



আসাদুজ্জামান ফুয়াদের বক্তব্যে স্পষ্ট যে এবি পার্টি অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে সেনাবাহিনীর যে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ বা ব্যাখ্যাকে ক্যু’র চেষ্টার সঙ্গে তুলনা করছে। এটি এক গভীর রাজনৈতিক সংকেত— যা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।

نظری یافت نشد


News Card Generator