অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন। তিনি দাবি করেন, এটি হয়ে উঠেছে ড. ইউনূসের ঘনিষ্ঠ, অযোগ্য এবং সুবিধাভোগীদের পুনর্বাসন কেন্দ্র।
অন্তর্বর্তী সরকার ইউনূস ঘনিষ্ঠদের পুনর্বাসন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে: রাশেদ খাঁনের বিস্ফোরক অভিযোগ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন। তিনি দাবি করেছেন, এই সরকার কোনো জাতীয় ঐক্যমূলক প্রশাসন নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘনিষ্ঠদের পুনর্বাসন কেন্দ্র।
সোমবার নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে রাশেদ এই মন্তব্য করেন। সেখানে তিনি বলেন, “গণ-অভ্যুত্থান যাদের রক্ত, ঘাম, চোখের জল ছাড়া বাস্তবায়িত হলো, সেই এলিট গোষ্ঠীকে নিয়েই এখন সরকার গঠন করা হয়েছে।”
তিনি ইঙ্গিত দেন, রাজপথে যারা আসেনি, আন্দোলনের সময় চুপ ছিল, তাদেরকে নিয়ে এখন সরকার চালানো হচ্ছে—এটা জনগণের সঙ্গে প্রহসনের শামিল।
রাশেদ খাঁনের অভিযোগ, “আমি ভেবেছিলাম ড. ইউনূস সাহেব নতুন ধারা আনবেন। কিন্তু তিনি নিজের এলাকা চট্টগ্রাম, আত্মীয়স্বজন আর এলিট বন্ধুবান্ধব ছাড়া কাউকে বিশ্বাস করতে পারেননি।দেশে বড় ধরনের সংস্কার দরকার ছিল শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে। কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজার দিয়ে এখন চিকিৎসা খাত মেরামতের চেষ্টা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, “নতুন শিক্ষা উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়ার পর তার কোনো কাজ দৃশ্যমান নয়। মনে হচ্ছে শুধুই পদায়ন হয়েছে, কাজের কোনো অগ্রগতি নেই।
তার মতে, সরকার ১১ মাসের জন্য সময় পেয়েছে, এই সময়ের মধ্যে নজিরবিহীন কাজ করার সুযোগ ছিল। কিন্তু পুরনো দলবাজি, আত্মীয়প্রীতি, এবং একচেটিয়া মনোভাব ছাড়া কিছুই দেখা যাচ্ছে না।
সবচেয়ে আশঙ্কাজনক বিষয় হিসেবে রাশেদ খাঁন তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নিযুক্তিকে। তার ভাষায়, “একজন নিরীহ, সরল লোককে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার গুরুদায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যিনি নাটুকে ভঙ্গিতে নিজেকে উপস্থাপন করছেন। কিন্তু অভিনয় দিয়ে তো নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় না, সেখানে বাস্তব অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা প্রয়োজন।
তিনি দাবি করেন, উপদেষ্টাদের কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার কথা থাকলেও বিগত ১১ মাসে একবারও তাদের আর্থিক হিসাব জনসমক্ষে আনা হয়নি।
রাশেদ খাঁনের ভাষায়, “যদি প্রতিটি উপদেষ্টার ১১ মাসের কর্মদক্ষতার হিসাব নেওয়া হয়, তাহলে দেখা যাবে অনেকেরই অবস্থা এপিএস বা প্রটোকল অফিসারদের মতো—তাদের দুদক দৌড়াতে হবে।
তিনি সরাসরি বলেন, “সরকার চাইছে জনগণের কাছে জবাবদিহিতা, অথচ নিজেরাই কোনো জবাবদিহিতার নজির রাখছে না। এটা দ্বিচারিতা ছাড়া আর কিছু নয়।
এই পোস্টে রাশেদ স্পষ্ট করে দেন যে, “সত্য কথা বললে দালাল ও সুবিধাভোগীরা অবশ্যই বিরক্ত হবে। কিন্তু কারও না কারও তো সত্য উচ্চারণ করতেই হবে।
তার এই বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে প্রচণ্ড আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যেখানে অনেকেই ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে রাশেদের অভিযোগকে সমর্থন করছেন, আবার কেউ কেউ এটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও দেখছেন।