বাংলাদেশে অনলাইন জুয়ার ক্রমবর্ধমান প্রবণতা সমাজে অবক্ষয় এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের আশঙ্কা সৃষ্টি করছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্ট থেকে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে, যেখানে দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে অনলাইন জুয়া সংক্রান্ত লেনদেনের ওপর নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়মিতভাবে তাদের গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যদি কোনো গ্রাহক বা মার্চেন্ট অনলাইন জুয়ার সাথে জড়িত বলে সন্দেহ হয়, তবে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করতে হবে।
এই নির্দেশনার মূল উদ্দেশ্য হলো অনলাইন জুয়ার কারণে সৃষ্ট সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ করা। এজন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সহায়তা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে, যা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণে সহায়তা করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানায়, অনলাইন জুয়ার ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে গ্রাহকদের সচেতন করা অত্যন্ত জরুরি। ব্যাংকগুলোকে তাদের গ্রাহকদের এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করতে হবে এবং সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ প্রচারণা চালাতে হবে।
এছাড়া, যে সমস্ত মার্চেন্ট নির্দিষ্ট কোনো এলাকার ব্যবসার তথ্য দিয়ে ব্যাংকে নিবন্ধন করেছেন, তাদের সেই এলাকাতেই ব্যবসা পরিচালনা নিশ্চিত করার জন্য ব্যাংকগুলোকেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সম্প্রতি প্রণীত ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুসরণ করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
এই উদ্যোগটির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যা সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।