close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বিএনপি নেতার নেতৃত্বে বালু উত্তোলন শুরু, নদী ও আশপাশের ঘরবাড়ি ভাঙনের আশঙ্কা। প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি স্থানীয়দের।..

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর ফুলকুমার নদ থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। এ কার্যক্রমের কারণে থানাঘাট বাজারের নতুন হাটশেড ও নদীর তীরবর্তী কয়েকটি পরিবারের বসতভিটা ভাঙনের শঙ্কায় পড়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বহুবার প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি। গত ২৬ জুন সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, থানাঘাট বাজার সংলগ্ন ফুলকুমার নদ থেকে পাইপ সংযুক্ত ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে এবং তা বিক্রি করা হচ্ছে।

নদীতীরবর্তী এলাকার বাসিন্দা রেজিয়া বেগম বলেন, “বালু উত্তোলনের কারণে আমাদের ঘরবাড়ি ভাঙনের মুখে পড়েছে। নিষেধ করলেও কেউ শোনে না।” আরেক বাসিন্দা মলিদা বেগম জানান, “এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।”

স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের চোখের সামনে বিএনপি নেতা ইউসুফ আলী বালু উত্তোলন ও বিক্রয় করছেন। তারা দ্রুত তদন্ত ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

ভূরুঙ্গামারী উপজেলা আহ্বায়ক রোকনুজ্জামান রোকন বলেন, “ড্রেজার মেশিন দিয়ে ফুলকুমার নদ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে থানাঘাট হাটশেডসহ নদীতীরবর্তী বাড়িঘর ঝুঁকির মুখে। আমরা উপজেলা প্রশাসনের কাছে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”

অভিযুক্ত ইউসুফ আলী প্রথমে কথা বলতে অস্বীকার করলেও পরে বলেন, “নদীর দুই পাশের জমি আমাদের, তাই বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছি।”

পাথরডুবি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সবুর বিষয়টি অজানা বলে জানিয়ে বলেন, “আমার কাছে এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।”

ভূরুঙ্গামরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গোলাম ফেরদৌস বলেন, “বালু উত্তোলনের খবর পেয়েছি, দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নদী ভাঙনের ভয়াবহতা ও বসতভিটা ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা নিয়ে এলাকাবাসী গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানাচ্ছেন যেন অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হয় এবং নদীর পরিবেশ ও জনজীবন রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

বালু উত্তোলনের এই অবৈধ কার্যক্রমের ফলে শুধু নদীর তীরস্থ বসতঘরই নয়, পরিবেশগত ভারসাম্যও বিপন্ন হয়ে পড়ছে। ড্রেজার মেশিন দ্বারা মাটি ও বালুর অতিরিক্ত উত্তোলন নদীর তীরের সুরক্ষা কমিয়ে দেয়, যা দ্রুত ভাঙন ও ভূমিধসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

স্থানীয়রা জানান, এই বালু উত্তোলনের কারণে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হচ্ছে এবং পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে বর্ষাকালে বন্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং স্থানীয় কৃষিজমিও প্রভাবিত হচ্ছে।

নদী ভাঙনের কারণে থানাঘাট বাজারের নতুন হাটশেডসহ আশেপাশের অনেক ব্যবসা ও বসতবাড়ি বিপন্ন। ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি জীবন-যাত্রায় বিঘ্ন ঘটেছে।

অন্যদিকে, স্থানীয় প্রশাসনের একাংশের উদাসীনতার কারণে অবৈধ এই কার্যক্রম বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। অনেকেই বলছেন, প্রশাসনের চোখের সামনে ঘটে চলা এই অবৈধ কাজের পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে।

নদী ও পরিবেশ সংরক্ষণে কাজ করে আসা স্থানীয় এনজিও ও পরিবেশবাদী গোষ্ঠীও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন এবং নদী রক্ষায় স্থানীয় জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন।

স্থানীয় প্রশাসনও বলেছে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কত দ্রুত ও কার্যকরভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।

বালু উত্তোলন বন্ধে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা ও দায়বদ্ধতা অপরিহার্য। নদী রক্ষা না করলে ভবিষ্যতে আরো বড় ধরনের দুর্ভোগ অপেক্ষা করছে স্থানীয় মানুষের জন্য।

نظری یافت نشد


News Card Generator