close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

অবহেলিত মাতৃভাষা: বিপন্ন ৩টি ভাষা বাঁচাতে আট বছর পরও প্রাথমিক পর্যায়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশের ৪১টি মাতৃভাষার মধ্যে বিপন্নপ্রায় মাত্র ৩টি ভাষা সংরক্ষণের প্রাথমিক পদক্ষেপ নিয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট। তবে কাজটি আট বছর পরও প্রাথমিক পর্য
বাংলাদেশের ৪১টি মাতৃভাষার মধ্যে বিপন্নপ্রায় মাত্র ৩টি ভাষা সংরক্ষণের প্রাথমিক পদক্ষেপ নিয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট। তবে কাজটি আট বছর পরও প্রাথমিক পর্যায়েই রয়ে গেছে। এই তিনটি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষা—রেংমিটচ্য, কন্দ ও পাত্র (লালেংথার)—এর মধ্যে কোনো ভাষায় মাত্র দুইজন এবং কোনো ভাষায় ছয়জন মানুষ কথা বলেন। ২০১৬ সালের ভাষা সমীক্ষায় এই ভাষাগুলো বিপন্ন হিসেবে চিহ্নিত হলেও সংরক্ষণ প্রক্রিয়া শুরু হতে লেগে যায় সাত বছর। এর ফলে এই ভাষাগুলোর অস্তিত্ব আরও সংকটাপন্ন হয়ে উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানান, এই তিন ভাষার শব্দ সংরক্ষণ করা হয়েছে এবং এখন ডিজিটাইজেশনের কাজ শুরু হবে। তবে দেশের আরও ১৪টি বিপন্ন ভাষা এখনো সংরক্ষণের বাইরে রয়ে গেছে। এর মধ্যে খাড়িয়া, কোডা, সৌরা, মুন্ডারি, খুমি, পাংখোয়া প্রভৃতি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষাগুলো রয়েছে। ভাষা সংরক্ষণের উদ্যোগ না নিলে এই ভাষাগুলোও বিলুপ্তির মুখে পড়বে। ধীরগতির কাজ, প্রশ্নবিদ্ধ উদ্যোগ ভাষা গবেষণায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের অগ্রগতি নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। ২০১৬ সালের সমীক্ষা শেষ হওয়ার পর আট বছরে মাত্র একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, যা জনসাধারণের জন্য সহজলভ্য নয়। সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশের ৪১টি ভাষার মধ্যে ১৬টির নিজস্ব লিপি রয়েছে, কিন্তু বাকি ২৫টি ভাষা এখনো লিপিহীন। অথচ লিপিহীন ভাষাগুলোর জন্য নতুন লিপি প্রবর্তন করার দায়িত্ব ইনস্টিটিউটের। এ ক্ষেত্রে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখা যায়নি। সমালোচকরা বলছেন, ভাষা সংরক্ষণ ও গবেষণার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি কার্যত অকার্যকর। একজন ভাষা গবেষক বলেন, “ইনস্টিটিউটের উচিত ছিল বাংলাকে আন্তর্জাতিক পরিসরে ছড়িয়ে দিতে এবং ভাষা নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা। কিন্তু এখানে অদক্ষ জনবল দিয়ে দায়সারা প্রকল্প চালানো হচ্ছে।” গবেষণার বদলে বই প্রকাশে আগ্রহ বিপন্ন ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগহীন থাকলেও ইনস্টিটিউট বিভিন্ন বই প্রকাশে ব্যস্ত। শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ছয়টি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে এবং সম্প্রতি বিশ্বসাহিত্যের সেরা ১৪টি গল্পের অনুবাদ গ্রন্থ প্রকাশ করা হয়েছে। তবে জানা গেছে, এই অনুবাদের কাজ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, যাদের মধ্যে একজন ছাড়া কারও অনুবাদের অভিজ্ঞতা নেই। জাতীয় স্বীকৃতি, কিন্তু সীমিত কার্যক্রম ১৯৯৯ সালে ইউনেসকো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আইন পাস হয়। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানটি ইউনেসকোর দ্বিতীয় গ্রেডের স্বীকৃতি পেলেও কার্যক্রমের গতি আশানুরূপ নয়। ভাষা সংরক্ষণে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে বাংলাদেশের বহু ভাষা অদূর ভবিষ্যতে হারিয়ে যেতে পারে। গবেষকরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের দায়িত্বশীলতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
Tidak ada komentar yang ditemukan


News Card Generator