কক্সবাজারের টেকনাফে পায়ুপথে ২ হাজার পিস ইয়াবা বহন করার সময় বাস থেকে আটক হয়েছেন বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা নুর আহমদ। বিজিবির তল্লাশিতে বেরিয়ে আসে ভয়ংকর মাদক কৌশলের চাঞ্চল্যকর তথ্য।
টেকনাফে অভিনব কায়দায় মাদক পাচারের সময় ধরা পড়েছেন বিএনপির একজন ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা। বিজিবির এক চেকপোস্টে তাকে তল্লাশি করে তার শরীরের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দুই হাজার পিস ইয়াবা।
শনিবার (১২ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর এলাকায় ইমামের ডেইল নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। ৬৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা নিয়মিত তল্লাশির অংশ হিসেবে একটি যাত্রীবাহী বাসে অভিযান চালান। এসময় সন্দেহভাজন হিসেবে আটক হন এক ব্যক্তি, যিনি পরবর্তীতে নিজের পরিচয় দেন নূর আহমদ (৩০) নামে। তিনি টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।
প্রাথমিকভাবে তল্লাশিতে কিছু না পাওয়া গেলেও, তার আচরণে অসঙ্গতি লক্ষ্য করেন বিজিবি সদস্যরা। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি স্বীকার করেন, পায়ুপথে ইয়াবা বহন করছেন তিনি। পরে মেডিকেল পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায়, তার দেহে রয়েছে বিপুল পরিমাণ মাদক। নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় শরীর থেকে বের করা হয় মোট ২ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন ৬৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জসীম উদ্দিন। তিনি বলেন, “নুর আহমদ নামে একজন যাত্রী নীল দরিয়া পরিবহনের একটি বাসে করে যাচ্ছিলেন। চেকপোস্টে বাস থামানোর পর তার চলাফেরায় সন্দেহ হলে তাকে আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তার দেহের ভেতরে মাদক বহনের বিষয়টি সে নিজেই স্বীকার করে। এরপর তার শরীর থেকে দুই হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।”
আটক নূর আহমদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
এদিকে একজন রাজনৈতিক দলের নেতা হয়ে এমন অপরাধে জড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। কেউ বলছেন, এ ধরনের লোকজনই রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। আবার অনেকে দাবি করছেন, এ ঘটনার পেছনে আরও বড় মাদকচক্র থাকতে পারে যার সঙ্গে নূর আহমদ জড়িত।
টেকনাফ এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই মাদক পাচারের রুট হিসেবে পরিচিত। মিয়ানমার সীমান্তঘেঁষা এই অঞ্চলে ইয়াবার প্রবেশ বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। তবুও এক শ্রেণির চিহ্নিত ব্যক্তি এবং রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা চক্র বারবার আইন ভাঙার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
নুর আহমদের মতো রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।