close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

নতুন প্রশাসন, নতুন সিদ্ধান্ত: নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাস্কর্য ভাঙা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে..

Hafijur Rahman avatar   
Hafijur Rahman
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে 'অঞ্জলি লহ মোর' ভাস্কর্যটি সম্প্রতি ভেঙে ফেলা হয়েছে, যা তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেয়। শিক্ষার্..

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে উদ্বোধনের মাত্র দেড় বছরের মাথায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি) 'অঞ্জলি লহ মোর' ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়েছে, যা ক্যাম্পাসে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। কাজী নজরুল ইসলামের একটি গানের নামে নামকরণ করা এই ভাস্কর্যটি বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ এবং পুরাতন কলা অনুষদ ভবনের মাঝখানের পুকুরপাড়ে স্থাপন করা হয়েছিল। তবে, গত ৫ আগস্টের পর নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পরই এটি ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পুকুরগুলোর সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য চার কোটিরও বেশি টাকার একটি বৃহৎ প্রকল্পের অংশ হিসেবে এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে শিক্ষার্থীরা ও শিক্ষাবিদদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

অনেক শিক্ষার্থীর মতে, এটি নিছক একটি ভাস্কর্য ভাঙা নয়, বরং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বলি। এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর, যার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি ও নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগ ছিল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান এবং প্রকৌশল দপ্তরের উপ-প্রধান প্রকৌশলী মো. মাহবুবুল ইসলাম দুজনেই 'অবগত নন' বলে মন্তব্য করেন এবং পরিকল্পনা দপ্তরকে জিজ্ঞাসা করার পরামর্শ দেন।

তবে, পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান সরাসরি বলেছেন, "বর্তমান প্রশাসন ভাস্কর্যটি গ্রহণ করেনি, তাই এটি ভাঙা হয়েছে। সিদ্ধান্ত এসেছে উপাচার্য স্যারের পক্ষ থেকেই।" তিনি আরও যোগ করেন যে, ৫ আগস্টের পর শিক্ষার্থীরাই প্রথমে এর বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছিল এবং ভাঙার চেষ্টা করেছিল।

উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে থাকা ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জয়নুল আবেদীন সিদ্দিকীও এ বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। তিনি জানান, "অনেক আগেই ডিনবৃন্দ ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তখন নানা বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, বিশেষ করে এই ভাস্কর্য নিয়েই অনেক আপত্তি উঠেছিল। সেই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতেই হয়তো এটি ভাঙা হয়েছে।"

এই ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কেউ কেউ এটিকে একটি নান্দনিক স্থাপনার ধ্বংসযজ্ঞ বলে মনে করছেন, আবার কেউ কেউ প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন। এই ভাস্কর্য ভাঙার পেছনের আসল কারণ এবং এর ভবিষ্যৎ প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।

No comments found


News Card Generator