বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দীর্ঘ ১৬ বছর ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত জনগণের প্রত্যাশা পূরণের একমাত্র পথ হলো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। তিনি বলেন, জনগণ এবার তাদের নিজস্ব সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য ভোট দিতে চায়—এটাই গণতন্ত্রে ফেরার একমাত্র রাস্তা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও দমন-পীড়নের মধ্য থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে একটি গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন। তিনি বলেন, “আমাদের মানুষ আজ ভোট দিতে চায়, তারা তাদের নিজস্ব প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে চায়। ১৫ থেকে ১৬ বছর ধরে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। সেই সুযোগ এবার তাদের দিতে হবে।”
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে ঠাকুরগাঁও জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে সদর ও রুহিয়া থানা বিএনপির নির্বাহী কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, “জনগণ অনেক দিন ধরে ভোটের অধিকার হারিয়েছে। এবার তারা ভোটের মাধ্যমে নিজেদের সরকার গঠন করতে চায়। সেই সরকারই অর্থনীতি সচল করবে, দেশের উন্নয়ন ঘটাবে, এবং গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করবে।”
তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি দীর্ঘ সময় ধরে রাষ্ট্রীয় দমননীতির শিকার হয়ে আসছে। “আমরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ছয় বছর কারাগারে থাকতে হয়েছে। প্রায় ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। ২০ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে, আর ইলিয়াস আলীসহ প্রায় ১৭০০ জন গুম হয়েছেন—যাদের এখনো কোনো খোঁজ নেই,” বলেন ফখরুল।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে নির্বাসিত করা হয়েছে। তিনি এখনো দেশে ফিরতে পারেননি। অথচ দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তার হাতেই নিরাপদ।”
সভায় বিএনপির জেলা, উপজেলা ও থানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ হলো মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া। এই নির্বাচনের মাধ্যমেই বাংলাদেশ আবারও গণতন্ত্রের পথে ফিরবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “এই নির্বাচন কেবল সরকার পরিবর্তনের নয়, এটি একটি ব্যবস্থাপনার পরিবর্তনের নির্বাচন। একটি এমন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে যেখানে মানুষ ভয়ের মধ্যে নয়, স্বাধীনভাবে নিজের মত প্রকাশ করতে পারে, ভোট দিতে পারে, এবং নিজের ভবিষ্যৎ নিজেই নির্ধারণ করতে পারে।”
মির্জা ফখরুলের বক্তব্যে স্পষ্ট প্রতিফলিত হয়েছে—বিএনপি এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি নির্বাচনীমুখী। দলটি মাঠ পর্যায়ে সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং জনগণকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে সম্পৃক্ত করার ওপর জোর দিচ্ছে। তার ভাষায়, “বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিতে চায়, পরিবর্তন চায়, স্বাধীনতা চায়—আমাদের দায়িত্ব তাদের পাশে দাঁড়ানো।”