close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

নির্বাচন নিয়ে সরকারের অফিসিয়াল নির্দেশনা পায়নি সেনা বাহিনী..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকার এখনো সেনাবাহিনীকে আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা না দিলেও বাহিনী বলছে, তারা সর্বদা প্রস্তুত। রাজনৈতিক অস্থিরতা, ঈদের নিরাপত্তা ও সীমান্ত পরিস্থিতি—সবখানে সেনাবাহিনীর প্রশংসনীয় ভূম..

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে। এর মধ্যেই জনগণের মধ্যে অন্যতম আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে সেনাবাহিনীর ভূমিকা। তবে এখনও পর্যন্ত নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের অফিসিয়াল নির্দেশনা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর একজন শীর্ষ কর্মকর্তা।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসে মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের (স্টাফ কর্নেল) কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “সরকার যদি সেনাবাহিনীর উপর দায়িত্ব দেয়, আমরা সেই অনুযায়ী দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত আছি। তবে এখনও পর্যন্ত অফিসিয়াল কোনো নির্দেশনা পাইনি।

দেশজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই সম্প্রতি একাধিক এলাকায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা মব ভায়োলেন্স বা গণ-সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, “মব ভায়োলেন্স এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী যেকোনো কর্মকাণ্ডে আমরা কঠোর অবস্থানে ছিলাম। রংপুরে সাম্প্রতিক ঘটনায় সেনাবাহিনী দ্রুত সময়ের মধ্যে হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছিল।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “গণ-সহিংসতা আগের তুলনায় অনেকাংশে কমে এসেছে। আমরা ঘটনাস্থলে সময়মতো পৌঁছাতে পেরেছি বলেই বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।

সাম্প্রতিক ঈদুল আজহার সময় সেনাবাহিনী রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় দায়িত্ব পালন করেছে চরম নিষ্ঠার সঙ্গে। গুরুত্বপূর্ণ বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন ও লঞ্চঘাটে সেনা সদস্যরা দিনরাত টহল দিয়েছেন।

শফিকুল ইসলাম জানান, “আমরা স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে চেকপোস্ট বসিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করেছি। নারী সেনাসদস্যরাও দায়িত্ব পালনে এগিয়ে এসেছে। ১২৫৫টি গাড়ি থেকে যাত্রীদের ফেরত দেওয়া হয়েছে ৩৫ লাখ টাকার বেশি।

তিনি বলেন, “এই সাফল্য এসেছে আমাদের সেনা সদস্যদের আন্তরিকতা, সততা এবং পরিশ্রমের কারণে। ঈদের সময় দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমাতে সক্ষম হয়েছি।

এক ফুটবল ম্যাচে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সেনা সদস্যদের দ্বারা জাতীয় পতাকা বিক্রেতাকে মারধরের একটি ঘটনাও উঠে আসে সংবাদ সম্মেলনে। এ বিষয়ে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, “ঘটনাটি ছিল দুঃখজনক এবং বিচ্ছিন্ন। পরবর্তীতে ওই ব্যক্তির সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করি, দুঃখ প্রকাশ করি এবং তার ব্যবসা সচল রাখতে তাকে এক লাখ টাকা সহায়তা প্রদান করি।

মিয়ানমার ও ভারতের সীমান্ত এলাকা থেকে পুশ-ইনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ড যথেষ্ট সক্রিয় রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় টহল ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। আমরা এই বিষয়ে সমন্বয় রক্ষা করছি তবে সেনাবাহিনী সরাসরি যুক্ত হওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি।

সম্প্রতি সেনাবাহিনী বেশ কয়েকজন শীর্ষ সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে। এ বিষয়ে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, “সন্ত্রাসীদের ধরতে আমাদের অভিযানে গোপনীয়তা রাখা হয়। ভবিষ্যতেও এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকা তৈরি করে সেই অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করছি। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সদা সচেতন।

নির্বাচনের জন্য সেনাবাহিনীকে এখনও সরাসরি ডাকা না হলেও তারা যে সর্বদা প্রস্তুত এবং দেশের প্রতিটি সংকটময় মুহূর্তে দায়িত্বশীল ভূমিকায় থাকতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, সেটি স্পষ্ট করে দিয়েছেন কর্নেল শফিকুল ইসলাম। জনমানুষের নিরাপত্তা, দুর্যোগ মুহূর্তে সহায়তা এবং শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডে জনগণের আস্থা আরও গভীর হচ্ছে।

Geen reacties gevonden