close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

নির্বাচন কমিশনকে সংসদের অধীনে আনা যাবে না: বিএনপি ও ইসির বিরল ঐক্যমত..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সংসদীয় কমিটির অধীনে আনার প্রস্তাব ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোচনা চলছে। এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে বিএনপি এবং আশ্চর্যজনকভাবে ইসিও একই অবস্থান নিয়েছে। দুটি পক্ষের এই বিরল ঐক্যম..

জাতীয় নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের দায়বদ্ধতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কিছু সুপারিশ পেশ করেছে। তাদের মতে, একটি সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটি গঠনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করা উচিত। তারা আরও প্রস্তাব দিয়েছে, ইসির বাজেট, প্রশাসনিক ও নীতিগত প্রস্তাব যাচাই করে অনুমোদনের জন্য এই কমিটি কাজ করবে।

তবে বিএনপি এই প্রস্তাবকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, ইসি একটি স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান এবং তাকে কোনো রাজনৈতিক কাঠামোর অধীনে আনা যাবে না। বিএনপির নেতারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, সংসদীয় কমিটির ক্ষমতা থাকলে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। সংসদে যে দল ক্ষমতায় থাকবে, সেই দলের প্রভাব এই কমিটির ওপর থাকবে—এটি বাংলাদেশের বাস্তবতা।

ইসিও তাদের ভিন্নমত পত্রে স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, সংসদীয় কমিটির অধীন হলে কমিশনের স্বাধীনতা বিঘ্নিত হতে পারে। তারা মনে করে, প্রচলিত আইনেই নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা অপেশাদারিত্বের অভিযোগ মোকাবেলা সম্ভব।

সংস্কার কমিশনের আরেকটি প্রস্তাব ছিল, জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে একটি ‘সার্টিফিকেশন’ দিতে হবে যে নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে। এই ঘোষণার পর কোনো রাজনৈতিক দল চাইলে জাতীয় কাউন্সিল বা সুপ্রিম কোর্টে আপিল করতে পারবে। এই প্রস্তাবকেও বিএনপি এবং ইসি উভয়ই বাস্তবসম্মত নয় বলে মনে করেছে।

বিএনপির মতে, নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে থাকে। অতিরিক্ত সার্টিফিকেশন ও আপিল প্রক্রিয়া রাজনৈতিক বিতর্ক ও জটিলতা তৈরি করবে।

সংস্কার কমিশন বলছে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কোনো প্রতিষ্ঠানই জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নয়। অতীতে অনেক অনিয়মের দায় ইসি রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের পর কিছু করার সুযোগ থাকেনি, যা ভবিষ্যতে ঠেকাতে তারা সংসদীয় পর্যবেক্ষণের সুপারিশ করেছে।

এই মুহূর্তে প্রশ্ন উঠেছে—ইসির স্বাধীনতা বনাম দায়বদ্ধতা, কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ? বিরোধী দল বিএনপি এবং নির্বাচন কমিশনের অভিন্ন অবস্থান এই বিতর্ককে আরও জটিল করেছে।

নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করতে হলে কার্যকর ও গ্রহণযোগ্য সংস্কার প্রক্রিয়া দরকার, তবে সেটি যেন কোনোভাবেই একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ না করে—এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি