ধর্ম উপদেষ্টা ড. আফম খালিদ হোসেন বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার অল্প সময়ের জন্য এসেছে। খুব শিগগিরই নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে তিনি নিজ ঠিকানায় ফিরে যাবেন।
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আফম খালিদ হোসেন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দীর্ঘস্থায়ী নয়। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার গঠিত হলেই ক্ষমতা শান্তিপূর্ণভাবে হস্তান্তর করা হবে। এরপর তিনি নিজ ঠিকানায় ফিরে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
শুক্রবার দুপুরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে শ্রী অদ্বৈত আচার্য প্রভুর জন্মধাম রাজারগাঁও মন্দির কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ পরিদর্শন শেষে স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, “আমাদের হাতে সময় খুব কম। আরও কিছু সময় পেলে দেশের জন্য আরও অনেক কাজ করা যেত। তবে নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনেই আমাদের মূল লক্ষ্য।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের পাশাপাশি সেনা, পুলিশ, বিজিবি, র্যাবসহ সব বাহিনী ইতিমধ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণেই এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পরে শ্রী অদ্বৈত আচার্য মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
এ সময় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেজাউল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাকির হোসেন, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান মানিকসহ স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং মন্দির পরিচালনা কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
দিনের অন্য কর্মসূচিতে ধর্ম উপদেষ্টা ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্প জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে মুসল্লিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি মসজিদ উন্নয়ন সংস্কার কাজে পাঁচ লাখ টাকা সরকারি অনুদান প্রদানের আশ্বাস দেন। তার এই ঘোষণায় স্থানীয় মুসল্লিদের মধ্যে স্বস্তি ও কৃতজ্ঞতার পরিবেশ তৈরি হয়।
ড. আফম খালিদ হোসেন বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়, আর আমরা সেই প্রত্যাশা পূরণের জন্য কাজ করছি। নির্বাচনের পর নির্বাচিত সরকারের কাছেই দেশের দায়িত্ব অর্পণ করা হবে। এরপর আমি আবার আমার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাব।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ধর্ম উপদেষ্টার এই বক্তব্যে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে স্বচ্ছতা ও আস্থার বার্তা পৌঁছেছে। অনেকেই বলছেন, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের এই প্রতিশ্রুতি দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে।
নির্বাচন ঘিরে যখন নানা গুঞ্জন ও রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলছে, তখন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একজন সদস্যের এমন বক্তব্য জনমনে স্বস্তির সঞ্চার করেছে। এখন দেখার বিষয়, প্রতিশ্রুত সেই নির্বাচিত সরকার কত দ্রুত দায়িত্ব গ্রহণ করে দেশের উন্নয়নের পথে এগিয়ে যায়।